শিলিগুড়ি: স্বাস্থ্য দফতরে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন ক্ষমতাসীন একদল চিকিৎসক। অভিযোগ, তাঁদের ‘নির্দেশেই’ কার্যত বকলমে চলছে রাজ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। প্রভাব এতটাই যে তাঁদের নির্দেশ বিনা নেওয়া যায় না বড়সড় কোনও সিদ্ধান্ত। অভিযোগ উঠেছে লাগাতার। পরিচিতি ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ নামেই। আর তাতেই জনমানসে ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে উত্তরের চিকিৎসকদের। নামে উত্তরবঙ্গ থাকায়, উত্তরের চিকিৎসকদের সম্মান নষ্ট হচ্ছে, এ কথা জানিয়ে প্রতিবাদপত্র পাঠাল IMA শিলিগুড়ি শাখা। সোজা কথায়, উত্তরবঙ্গ লবি থেকে দূরত্ব তৈরিতে মরিয়া চিকিৎসকদের একাংশ। কানাঘুষোয় চিকিৎসকেরা বলছেন, এই লবি আসলে অশরীরি আত্মা। বাস্তবে এদের প্রকাশ্যে দেখা যায় না। কিন্তু, রাজ্যের স্বাস্থ্যে সর্বেসর্বা এই লবিই।
আছেন কারা?
নামে উত্তরবঙ্গ শব্দ থাকায় এবং আরজি কর কাণ্ডে মানুষের প্রবল ক্রোধ তৈরি হওয়ার জেরে উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকরাও সমস্যায় পড়তে পারেন। অথচ এই লবির সঙ্গে উত্তরবঙ্গর চিকিৎসককূলের যোগই নেই। বলছেন চিকিৎসকদের বড় অংশ। তিলোত্তমা কাণ্ডের রেশ ধরে সাম্প্রতিক বিতর্ক বাড়তেই ফের শিরোনামে এই ‘উত্তরবঙ্গ লবি’। কারা আছেন সেই লবিতে? চিকিৎসকদের কানাঘুষো, গড়িয়ার এক অর্থোপেডিক সার্জেন হলেন এই লবির মূল মাথা। সরকারি চিকিৎসক না হলেও এই চিকিৎসকের সম্মতি ছাড়া পোস্টিং থেকে কোন কিছুর ফাইল নাকি এক চুলও নড়ে না। চিকিৎসক মহলের দাবি, উত্তরবঙ্গ মেডিকেলের ছাত্র ছিলেন এই চিকিৎসক। সেই থেকেই তিনি ও তাঁর অনুগামীরা ‘উত্তরবঙ্গ লবি’ নামে পরিচিত। যদিও তিনি থাকেন গড়িয়ায়। প্রবল ক্ষমতাবান উত্তরবঙ্গ লবির অন্তত সাত চিকিৎসকের মধ্যে এক জন জলপাইগুড়ির বাসিন্দাও আছেন বলেই কানাঘুষো চিকিৎসক মহলে। তবে বাকি সকলেই কলকাতা বা দক্ষিনবঙ্গে থাকলেও তাঁদেরই লবির নাম ‘উত্তরবঙ্গ লবি’।
শিলিগুড়িতে আইএমএ শাখার সভাপতি অরুণ গুপ্তার দাবি, “আমরা উত্তরবঙ্গের চিকিৎসকেরা কেউ এই লবিতে নেই। অথচ লবির নাম উত্তরবঙ্গ লবি। মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হচ্ছে। আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ক্ষমতাসীন লবিকে উত্তরবঙ্গ লবি নামে চিহ্নিতকরণ বন্ধ হোক।”
শিলিগুড়িতে আইএমএ সম্পাদক শঙ্খ সেন জানান, “বিড়ম্বনায় পড়েছি আমরা। যে লবি নিয়ে আলোচনা তার সঙ্গে উত্তরবঙ্গে আমরা যারা চিকিৎসা করি তারা কেউ যুক্ত নই। অথচ লবির নাম উত্তরবঙ্গ লবি। আমরা শব্দবন্ধ ব্যবহার নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। আমরা উত্তরবঙ্গে কর্মরতরা এই লবির অংশ নই। তাই যারা লবিতে আছেন তাদের নিয়ে কিছু আলচনা বা তদন্তে ওই শব্দবন্ধ ব্যবহার ন করাই ভাল।” তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসক এস পি দাসের নাম শুনিনি। তবে সুশান্ত রায় জলপাইগুড়ির চিকিৎসক। তারা আদৌ ওই লবিতে আছেন কিনা তা তারাই বলতে পারবেন। কিন্তু কাউকে নিয়ে আলোচনা হলে হোক, আপত্তি নেই। কিন্তু উত্তরবঙ্গ লবি শব্দবন্ধ নয়।”