Calf died: সন্তান হারানোর যন্ত্রণা বুকে নিয়ে এগিয়ে গেল মা হাতি, ৩৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার হস্তিশাবকের দেহ
Calf died: সন্তান হারানোর বেদনা যেন কোনওভাবেই ভুলতে পারছিল না মা হাতি। তাই কখনও তেড়ে আসছিল চা শ্রমিকদের দিকে। আবার কখনও কর্তব্যরত বন কর্মীদের দিকে। এই ভাবেই রাত কাটে বন কর্মীদের।
ডুয়ার্স: মায়ের মন। ৩৩ ঘণ্টা ধরে মৃত সন্তানকে আগলে বসেছিল। কাউকে কাছে ঘেঁষতে দেয়নি। শেষে মৃত শাবককে রেখে মা জঙ্গলের পথে পা বাড়াতেই হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বনকর্মীরা। প্রায় ৩৩ ঘণ্টা পর অবশেষে হস্তি শাবকের নিথর দেহ উদ্ধার করলেন তাঁরা। মৃত্যুর কারণ জানতে করা হল ময়নাতদন্ত। ডুয়ার্সের কারবালা চা বাগানের ঘটনা।
শনিবার নালায় পড়ে মৃত্যু হয় এক হস্তি শাবকের। সকাল থেকেই শাবকের দেহ আটকে পাহারা দেয় মা হাতি। বন দফতরের কর্মীরা উদ্ধারে গেলে তাঁদের গাড়িতে হামলা চালায়। কখনও আবার তেড়ে আসে। সন্তান হারানোর রাগ আছড়ে পড়ে বাগানের উপর। তছনছ করে চা বাগানের শেড ট্রি ও চা গাছ। আতঙ্কে বন কর্মীরা নিরাপদ দূরত্বে গাড়ি রেখে রাতভর মা হাতির উপর নজরদারি চালান। মা হাতির তাণ্ডবের আতঙ্ক এখনও চোখে মুখে বন কর্মীদের।
সন্তান হারানোর বেদনা যেন কোনওভাবেই ভুলতে পারছিল না মা হাতি। তাই কখনও তেড়ে আসছিল চা শ্রমিকদের দিকে। আবার কখনও কর্তব্যরত বন কর্মীদের দিকে। এই ভাবেই রাত কাটে বন কর্মীদের।
এই খবরটিও পড়ুন
রবিবার সকাল থেকে ফের বন কর্মীরা শাবকের দেহ থেকে দূরে দাঁড়়িয়ে থেকে নজরদারি চালাতে থাকেন। হাতির দল জঙ্গলের পাশে রয়েছে বলে খবর পান তাঁরা। সকালবেলা ঘটনাস্থলে আসেন জলপাইগুড়ি বন বিভাগের এডিএফও জয়ন্ত মণ্ডল। জঙ্গলের পাশে হাতির দল রয়েছে শুনে দেহ তুলতে সাহস দেখান না তাঁরা।
এর পরই মা হাতি ও দলের গতিবিধি জানতে নিয়ে আসা হয় ড্রোন ক্যামেরা। ড্রোন নিয়ে আসার পরে দেখা দেয় নতুন সমস্যা। পাশেই যেহেতু বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনি, তাই সেনার তরফে ড্রোন ব্যবহারে প্রথমে বাধা দেওয়া হয়। পরে অবশ্য তাদের বুঝিয়ে ড্রোন উড়িয়ে দেখা হয় হাতির দলটির গতিবিধি। যখন আধিকারিকরা আশ্বস্ত হন হাতির দলটি নেই, এর পরই জেলা বনাধিকারিক এবং উত্তরবঙ্গের মূখ্য বনপালের সঙ্গে পরামর্শ করে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিট নাগাদ বন কর্মীরা দেহটি তুলে নিয়ে যান জঙ্গলে। সেখানেই ময়নাতদন্ত করা হয় হস্তিশাবকের দেহটি।
জলপাইগুড়ির সহকারী বনাধিকারিক জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “একটানা ৩৩ ঘণ্টা বন কর্মীরা হাতিটির উপর নজরদারি চালান। ড্রোন উড়িয়ে দেখা হয় হাতিদের গতিবিধি। যখন আমরা নিশ্চিন্ত হই হাতির দল জঙ্গলের গভীরে ফিরে গিয়েছে, তার পরই দেহ তোলা হয়। সকালবেলা মা হাতি জঙ্গলে ফিরে গেলেও আমরা তুলতে সময় নিয়েছি অনেকটা। কারণ এর আগে দেখা গিয়েছে মৃত শাবকের দেহ তুলে নিয়ে যাওযার পর মা হাতি সেই এলাকায় ঘুরে এসেছে। তাণ্ডব চালিয়েছে। তাই আমরা ঝুঁকি নিতে চাইনি। দেরি করে দেহ তোলা হয়েছে।” ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।