“… অন্য কিছু ভাবতে হবে” দল ছাড়া নিয়ে প্রশ্নে বিস্ফোরক বৈশালী
এলাকায় বেশ কিছু কাউন্সিলর আছেন, যারা কাউন্সিলর না হুলিগন সন্দেহ আছে। দুর্নীতিগ্রস্থরাই পিকের টিমে চোখ, কান হয়ে উঠেছে।
শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) মন্ত্রিত্ব ছেড়েছেন। দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে প্রায় গোটা রাজ্য জুড়ে তাঁর নামে ‘দাদার অনুগামীদের’ পোস্টার পড়েছে। বেসুরো শুনিয়েছে রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কেও (Rajib Banerjee)। ‘সততার প্রতীক’ লিখে তাঁর নামেও পোস্টার পড়েছে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায়। এবার সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বালির বিধায়ক বৈশালী ডালমিয়া (Baishali Dalmiya)। আগেই ফেসবুকে বিস্ফোরক ভিডিয়ো পোস্ট করে দলত্যাগের জল্পনায় উত্তাপ বাড়িয়েছেন বালির তৃণমূল বিধায়ক।
বুধবার বালি বিধানসভার ১৬ জন প্রাক্তন কাউন্সিলর নিয়ে বৈঠক করেছিল টিম পিকে (Prashant Kishor)। কিন্তু সেই বৈঠকে ডাক পাননি বিধায়ক বৈশালী। তারপরই বিকেলে দলের প্রাক্তন পুর প্রতিনিধিদের ‘গুন্ডা’, ‘অপদার্থ ও দুর্নীতিগ্রস্ত’ তকমা দেন জগমোহন কন্যা। এমতাবস্থায় টিভি নাইন বাংলায় এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার দিলেন ‘বিক্ষুব্ধ’ বৈশালী ডালমিয়া।
সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। লোকসভা নির্বাচনের পর এক বছরেরও বেশি সময় ধরে পিকের টিম কাজ করছে। পিকের টিমের কাজ, তৃণমূল বিধায়ক হিসেবে কীভাবে দেখছেন ?
পিকের টিম যখন দায়িত্ব নেয় তখন তাদের কাজ দেখে বেশ খুশিই হয়েছিলাম। হাওড়া মিউনিসিপালিটি নির্বাচনের আগে বলা হয়েছিল, এবার দল নতুন মুখ খুঁজছে। সেই অনুযায়ী আমরা নামও পাঠাই। পিকের টিম তাদের এলাকায় গিয়ে তাদের সম্পর্কে যাবতীয় খোঁজ খবর নেয়। পুরো কর্পোরেট কায়দায়। আমি নিজেও যেহেতু কর্পোরেট সেক্টরে কাজ করে এসেছি, আমি বেশ খুশিই হয়েছিলাম। কিন্ত আচমকাই সব বদলে যায়। কোভিড, আমফান পরবর্তী অধ্যায়ে পিকের টিম কুঁড়ে হয়ে গেছে। এলাকায় বেশ কিছু কাউন্সিলর আছেন, যারা কাউন্সিলর না হুলিগান সন্দেহ আছে। দুর্নীতিগ্রস্তরাই পিকের টিমে চোখ, কান হয়ে উঠেছে। পিকের টিম তাদের থেকেই রিপোর্ট নিতে শুরু করে। গতকাল আমায় না জানিয়ে পিকের টিম কয়েকজন কাউন্সিলরের সঙ্গে বৈঠক করছিল। তাদের সামনেই দলীয় নেত্রী বিজয়লক্ষ্মী রাওকে বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর হেনস্থা করে। বুঝতে পারছি না পিকের টিম দলকে জুড়তে এসেছে না দলে বিভাজন করতে এসেছে।
আপনি এর আগেও বিভিন্ন সময়ে দলীয় কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। উচ্চতর নেতৃত্বকে জানিয়েছেন ?
গতকালের ঘটনা প্রেসের সামনে হয়েছে বলে অনেকে জানতে পেরেছে। কিন্তু এর আগেও বারংবার আমায় জ্বালাতন করা হয়েছে। উচ্চতর নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমি বলেছিলাম এটা আগামী দিনের জন্য ভাল নয়। অশনি সঙ্কেত। বিধায়ককেই যদি এরা জ্বালাতন করে, তাহলে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কি না করে। দলীয় নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে, কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে তো বুঝতে পারছি না। আগে পুরনো কর্মীদের উপর অত্যাচার হত। এখন সক্রিয় কর্মীদের উপর অত্যাচার হয়।
তাহলে কি আপনি আগামী দিনে দল পরিবর্তনের কথা ভাবছেন ?
এখন একটা দলে আছি। যখন যার সঙ্গে থাকি আমি তার প্রতি লয়াল। প্রাণপন কাজ করে যাই। কাজ করতে না পারলে অন্য কিছু ভাবতে হবে।
তার মানে আপনি কাজ করতে পারছেন না ?
আমি রাজনীতিতে এসেছিলাম মানুষের কাজ করার জন্য। শুরুর দিকে খুব ভাল কাজও করছিলাম। এখানেও একটা কিন্তু আছে। আমি কাজ করতে গেলে অনেক কাউন্সিলর বলছেন এখানে কেন এসেছেন। এখন সত্যিই কাজ করতে অসুবিধা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, আমি ফেসবুক মারফত এলাকাবাসীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতাম। কিন্তু একাদশীর দিন আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়।
কী মনে হচ্ছে কারা হ্যাক করেছে ? এটা কোন একজনের কাজ নয়। এটা সম্মিলিত কাজ। আমি নতুন একটা ফেসবুক আইডি খুলেছি। হয়তো সেটাও হ্যাক হবে। কিন্তু আমাকে দমানো যাবে না।
আরও পড়ুন: কিষেণজী হত্যা তৃণমূল সরকারের ভুল ছিল: ছত্রধর