Asansol: পরিত্যক্ত পাথর খাদানের জলে ভাসছে শিশু-সহ চারজনের দেহ
খাদানের পাশে সুড়ঙ্গ রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত তাঁরা খাদানে পড়ে যেতে পারেন। আত্মহত্যার তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
আসানসোল: পরিত্যক্ত পাথর খাদানের জলে ভাসছে চারটি দেহ। যার মধ্যে এক শিশু রয়েছে। রবিবার মকর সংক্রান্তির সন্ধ্যায় আসানসোলের কাল্লা এলাকায় এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। দেহগুলি পাথর খাদানের মধ্যে কী ভাবে এল, তা স্পষ্ট নয়। তবে দুর্ঘটনাবশত তাঁরা পাথর খাদানে পড়ে যেতে পারে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। আবার আত্মহত্যার তত্ত্বও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসানসোল উত্তর থানার অন্তর্গত কাল্লা ছাতাপাড়া এলাকায় একটি পরিত্যক্ত পাথর খাদানে চারটি মৃতদেহ ভাসতে দেখা যায়। দেহগুলির মধ্যে এক পুরুষ, এক মহিলা দুটি শিশুও আছে। চারজন একই পরিবারের সদস্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কী ভাবে দেহগুলি পাথর খাদানে এসে পড়ল তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা গিয়েছে। দেহগুলি উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ময়নাতদন্তের পরই প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল্লা ছাতাপাড়া এলাকায় পরিত্যক্ত পাথর খাদানের মধ্যে এলাকাবাসীই প্রথমে চারটি দেহ ভাসতে দেখেন। তারপর তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। উদ্ধারকারী দলও ঘটনাস্থলে আসে। তারা দেহগুলি উদ্ধারের চেষ্টা শুরু করে।
স্থানীয় বাসিন্দা লাল্টু মণ্ডল জানান, পাথর খাদানটি অনেকদিন ধরেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। প্রায় ৩০০ ফুট গভীর পরিত্যক্ত পাথর খাদানের জলে চারটি দেহ ভাসছিল। তারপর পুলিশ, উদ্ধারকারী দল এসে দেহগুলি উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্তু, খাদানটি ৩০০ ফুট গভীর হওয়ায় দেহগুলি উদ্ধারে সমস্যা হয়।
তবে কী ভাবে পাথর খাদানে একসঙ্গে চারটি দেহ এল, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা মলয় মাজির মতে, খাদানের পাশে সুড়ঙ্গ রাস্তা রয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনাবশত তাঁরা খাদানে পড়ে যেতে পারেন। আবার স্নান করতে নেমে দুর্ঘটনা অথবা এটা আত্মহত্যার ঘটনাও হতে পারে বলে এলাকাবাসীর অনেকের দাবি। তবে ময়নাতদন্তের পরই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসবে বলে পুলিশের দাবি। আলো জ্বালিয়ে শেষ পর্যন্ত রাতের দিকে দেহগুলি উদ্ধার করা হয়।
এদিকে, খাদানে ভাসমান চারটি দেহের পরিচয়ও এখনও জানা যায়নি। আসানসোল পুরনিগমের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর উৎপল সিনহা বলেন, “আমার কাছে এমন কোন খবর নেই যে, এই এলাকায় চারজন নিখোঁজ রয়েছে। গোটা বিষয়টি পুলিশ দেখছে। আমরাও দেখছি।” তিনি আরও বলেন, “এই এলাকাটি খুবই বিপজ্জনক। কিছুদিন আগেই এই খাদান থেকে এক কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে, গোটা এলাকায় ফেনশিং বা ঘিরে দেওয়ার দাবি করেছি।” অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলার ডিপিআরডিও বা জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, “পাথর খাদানের জলে মৃতদেহ রয়েছে এমন খবর পুলিশের কাছ থেকে পাওয়ার পরে উদ্ধারকারী দলকে এলাকায় পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানে আছে। চারটি উদ্ধার হয়েছে শুনলাম। শনাক্তকরণের চেষ্টা চলছে।”