Bank Fraud: অজান্তেই ফোনে ডাউনলোড হল Anydesk! এক ক্লিকেই পরপর তিন ব্যাঙ্ক থেকে খোয়া গেল লক্ষাধিক টাকা
Bank Fraud: লিঙ্কে ক্লিক করার পর থেকে একাধিক ওটিপি আসতে থাকে ফোনে, আর পরপর কেটে নেওয়া হয় টাকা। পুলিশের দ্বারস্থ হুগলির বাসিন্দা।
হুগলি : অনলাইনে প্রতারণা কোনও নতুন ঘটনা নয়। আগে ফোন করে তথ্য হাতানোর চেষ্টা করত হ্যাকাররা। আর এখন একটা লিঙ্ক পাঠানো হচ্ছে। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই বিপদ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই খোয়া যেতে পারে লক্ষ লক্ষ টাকা। এ ভাবেই প্রতারণার শিকার হলেন হুগলির চুঁচুড়া বুড়ো শিবতলার বাসিন্দা রমেন্দ্র নারায়ণ চক্রবর্তী। অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীর তিনটি ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে জানতে পেরেছেন তিনি। তাঁর নামে একটি ইউপিআই আইডি তৈরি করে টাকা সরানো হয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে চুঁচুড়া থানার দ্বারস্থ হয়েছে রমেন্দ্র বাবুর পরিবার। অভিযোগ জানানো হয়েছে সাইবার ক্রাইমেও।
প্রথমে ফোন, পরে লিঙ্ক, কী ভাবে হয় প্রতারণা
শুক্রবার দুপুরে ব্যাঙ্কের কর্মী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির ফোন আসে রমেন্দ্র নারায়ণ বাবুর কাছে। ফোন করে তাঁকে জানানো হয় যে তাঁর স্টেট ব্যাঙ্কের এটিএম কার্ডটি ব্লক হয়ে গিয়েছে। সেটা চালু করতে হবে। রমেন্দ্র বাবু প্রথমে তাঁকে জানান যে তিনি ব্যাঙ্কে গিয়ে এ বিষয়ে কথা বলবেন। ফোনে ওই ব্যক্তি জানান বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির জন্য ব্যাঙ্কে এইসব কাজ হচ্ছে না। ফোনেই জানাতে হবে। প্রতারক বলে একটি অ্যাপের সাহায্যে বাড়িতে বসেই ডেবিট কার্ড আপডেট করা যাবে। এরপর রমেন্দ্র বাবুর ফোনে একটি এসএমএস পাঠায় প্রতারক। সেই এসএমএসে ছিল একটি লিঙ্ক। ওই লিঙ্কে ক্লিক করতেই রমেন্দ্র নারায়ণ বাবুর মোবাইলে একটি অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যায়। এনিডেস্ক অ্যাপ ডাউনলোড হয়ে যায় আপনা আপনি। কিছুক্ষণ পরে রমেন্দ্র বাবু লক্ষ্য করেন তাঁর এসবিআই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেওয়া হচ্ছে।
পরপর তিন ব্যাঙ্ক থেকে খোয়া যায় টাকা
রমেন্দ্র বাবুর ছেলে রাজীব চক্রবর্তী জানান, শুক্রবার দুপুর ৩ টে নাগাদ ফোন আসে তাঁর বাবার কাছে। আর তার ঘণ্টা দুয়েক পর থেকে টাকা কাটতে শুরু করে। ফোনে ঢুকতে থাকে একের পর এক ওটিপি। কোনও ওটিপি কাউকে দেননি রমেন্দ্র বাবু। তা সত্বেও টাকা কেটে নেওয়া হয়। প্রথমে স্টেট ব্যাঙ্ক থেকে টাকা কাটার এসএমএস আসে। তারপর টাকা কাটতে থাকে কানাড়া ব্যাঙ্ক ও এইচডিএফসি ব্যাঙ্কে থাকা রমেন্দ্র বাবুর দুটি অ্যাকাউন্ট থেকেও।
কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে ফোন আসে তাঁর কাছে। বলা হয়, ৪২ হাজার টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। এরপর ব্যাঙ্কের তরফেই রমেন্দ্র বাবুর অ্যাকাউন্ট ও কার্ড ব্লক করে দেওয়া হয়। ফোন আসে এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক থেকেও। সেই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট ও কার্ডও ব্লক করা হয়। কিন্তু এসবিআই অ্যাকাউন্ট থেকে তারপরও টাকা কেটেছে। শনিবার সকালেও টাকা কাটার এসএমএস আসে। এখনও পর্যন্ত দেড় লক্ষ টাকা খোয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন রমেন্দ্র নারায়ণ বাবুর ছেলে।
তৈরি হয়েছে ইউপিআই আইডি
রমেন্দ্র বাবুর ইউপিআই আইডি না থাকা সত্ত্বেও তাঁর নামে আইডি তৈরি করেছে প্রতারকরা। তার মাধ্যমেই টাকা কাটা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্টেট ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টকে জম্মু কাশ্মীর ব্যাঙ্কের সঙ্গে লিঙ্ক করে ফ্লিপকার্ট বা রেজার পে’র মাধ্যমে টাকা সরানো হয়েছে বলে দাবি পরিবারের।
শনিবার চুঁচুড়া থানায় এবং চন্দননগর কমিশনারেটের সাইবার ক্রাইম বিভাগে অভিযোগ দায়ের করেন তাঁরা। তাঁর ছেলে রাজীব চক্রবর্তী জানান বাবা বুঝতেও পারেনি এনিডেস্ক অ্যাপ দিয়ে তাঁর ফোন হ্যাক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন : World Bank Loan for Bengal: রাজ্যের জন্য সুখবর, বাংলাকে প্রায় ১০০০ কোটির ঋণে অনুমোদন বিশ্ব ব্যাঙ্কের