Hooghly TMC: সুপ্রিমোর নির্দেশ, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙে দেওয়া হল তৃণমূলের কমিটি
Hooghly TMC: নবনিযুক্ত চুঁচুড়া শহরের সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাল জানান, নতুন কমিটি গঠন এবং স্থগিতাদেশের বিষয়ে তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি। তিনি বলেন, "আমি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমেই নতুন কমিটির কথা জানতে পারি। বর্তমানে আমরা এসআইআর-এর প্রতিবাদে আগামী ৫ নভেম্বর চুঁচুড়া ঘড়ি মোড়ে এক ঐতিহাসিক সমাবেশের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত।”

চুঁচুড়া: কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল ২৪ ঘণ্টা আগেই। দিন না পেরতেই সেই কমিটিই ভেঙে দেওয়া হল চুঁচুড়ায়। চুঁচুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের নবগঠিত কমিটি ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই সেটা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানাল জেলা তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব। সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অরিন্দম গুঁইন ও জেলা চেয়ারপার্সন অসীমা পাত্র ঘোষণা করেন, “গতকাল যে নতুন কমিটি চুঁচুড়ায় ঘোষণা করা হয়েছে, তা আগামী ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত ডিজলভ থাকবে।”
রবিবার চুঁচুড়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে নবনিযুক্ত তৃণমূলের শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় চুঁচুড়া শহর তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কমিটি গঠন করেছিলেন। ওই কমিটিতে ছিলেন কয়েকজন পুরনো কর্মী। উল্লেখযোগ্যভাবে সেই কমিটিতে ছিলেন সপ্তগ্রামের বিধায়ক তপন দাশগুপ্তের ভাই তথা হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার প্রাক্তন সিআইসি গোবিন্দ দাশগুপ্ত সহ একাধিক নতুন মুখ।
সোমবারই জেলা নেতৃত্ব জানায়, সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই আপাতত কমিটি ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এই প্রসঙ্গে অরিন্দম গুঁইন বলেন, “বর্তমানে এসআইআর এবং ভোট সংক্রান্ত নানা কাজে দলের কর্মীরা ব্যস্ত থাকায়, সাংগঠনিকভাবে কিছুদিনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
কমিটি গঠনের পর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে নবনিযুক্ত শহর সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, দলের সভাপতি সুব্রত বক্সীর নির্দেশেই তাঁরা নতুন কমিটি গঠন করেছিলেন। দলের দায়িত্ব নিয়ে চুঁচুড়া শহরকে সংগঠিত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এদিন স্থগিতাদেশ দেওয়ার পর চুঁচুড়া শহরের সভাপতি শ্যামাপ্রসাদ বলেন, “আমার কাছে একটি পত্র এসেছে। তাতে নতুন কমিটির উপর স্থগিতাদেশের নির্দেশিকা রয়েছে। তবে আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক বিচক্ষণ। তাঁদের সিদ্ধান্তই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। আমি তাঁদের সিদ্ধান্তকেই গুরুত্ব দিচ্ছি।”
চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, “নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। কখন গঠন হল, কবে স্থগিত হল, সে সম্পর্কেও আমার কাছে কোনও তথ্য নেই।”
অন্যদিকে, নবনিযুক্ত চুঁচুড়া শহরের সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাল জানান, নতুন কমিটি গঠন এবং স্থগিতাদেশের বিষয়ে তাঁকে কিছুই জানানো হয়নি। তিনি বলেন, “আমি সংবাদমাধ্যমের মাধ্যমেই নতুন কমিটির কথা জানতে পারি। বর্তমানে আমরা এসআইআর-এর প্রতিবাদে আগামী ৫ নভেম্বর চুঁচুড়া ঘড়ি মোড়ে এক ঐতিহাসিক সমাবেশের প্রস্তুতিতেই ব্যস্ত।”
হুগলির সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শহর সভাপতি করার পর চুঁচুড়া শহরে তৃণমূলের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে একাধিকবার। পুজোর পর রচনা চুঁচুড়া পুরসভার সামনে বিজয়া সম্মিলনীতে শ্যামাপ্রসাদকে পাশে নিয়ে বলেছিলেন, ‘কেউ পিছনে লাগলে ফনা ধরে ছোবল মারতে পারে ও।’ শ্যামাপ্রসাদের ডাক নাম ফনি। এখন সেই ফনির তৈরি কমিটিতেই মান্যতা দিল না দল। এসআইআর সহ আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে চুঁচুড়ার তৃণমূল কংগ্রেসের ভিতর যে গোষ্ঠীদ্বন্দ চলছে তা আবারও স্পষ্ট হয়েছে।
