Potato: কোনটা জ্যোতি, কোনটা চন্দ্রমুখী? চিনবেন কীভাবে?
Potato: বাজারের ব্যাগে ঢুকছে নাতো 'নকল' চন্দ্রমুখী? কীভাবে হবেন সাবধান? হুগলির ধনেখালি থেকে আরামবাগ, তারকেশ্বর থেকে সিঙ্গুর, গুরাপের বিস্তীর্ণ অংশে প্রতি বছরই ব্যাপক আলু চাষ দেখা যায়। কালোবাজারির অভিযোগ উঠছে এইসব এলাকা থেকেও।
ধনেখালি: ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকেই শুরু হয়েছিল, মার্চের প্রথম সপ্তাহে এসে তুমুল তৎপরতা। হুগলি থেকে বর্ধমান, মেদিনীপুর, রাজ্যের সব প্রান্তেই জোরকদমে চলছে আলু তোলার কাজ। এদিকে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় শীতেও প্রায়শই আকাশে দেখা গিয়েছে মন খারাপের মেঘ। ভিজেছে বাংলা। মারাত্বক ক্ষতিও হয়েছে আলু চাষের। উঠেছে ক্ষতিপূরণের দাবিও। এরই মধ্যে বাজারে নতুন আলু আসতে না আসতেই উঠছে কালোবাজারির অভিযোগ। ক্রেতাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ, চন্দ্রমুখী আলুর বদলে তাদের বাজারে ব্যাগে ঢুকছে ভিন স্বাদের সব আলু। কম দামী সব আলুকে চন্দ্রমুখী সাজিয়ে গুছিয়ে দেওয়া হচ্ছে বেশি দামে! চিন্তা বেড়েছে প্রশাসনের। কোনটাই বা চন্দ্রমুখী, কোনটাই বা জ্যোতি চিনবেন কীভাবে? স্বাদেই বা কী পার্থক্য? বাজারে আর কোন কোন ধরনের আলু রয়েছে? কীভাবে বাঁচবেন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। তারই উত্তর খুঁজলাম আমরা।
কীভাবে হবেন সাবধান?
হুগলির ধনেখালি থেকে আরামবাগ, তারকেশ্বর থেকে সিঙ্গুর, গুরাপের বিস্তীর্ণ অংশে প্রতি বছরই ব্যাপক আলু চাষ দেখা যায়। কালোবাজারির অভিযোগ উঠছে এইসব এলাকা থেকেও। কিন্তু, এলাকার চাষীরা বলছেন একটু সতর্ক থাকলেই কিন্তু মিলতে পারে রেহাই। পছন্দের আলু নিয়েই ঘরে ফিরতে পারবেন ক্রেতারা। ধনেখালির পদ্মপাড়ার বাসিন্দা বুদ্ধদেব ঘোষ বলছেন কলোম্বিয়া ও হেমাঙ্গিনী আলুর কথা। তিনি বলছেন জ্যোতি চন্দ্রমুখীর সঙ্গে বর্তমানে বাজারের ভালই দখল নিয়েছে এই নতুন দুই প্রজাতির আলু। ৫০ কেজি বস্তার এক বস্তা সদ্য মাঠ থেকে তোলা চন্দ্রমুখী এখন কোথাও বিক্রি হচ্ছে সাড়ে সাতশো টাকায়, কোথাও আবার বিক্রি হচ্ছে আটশো টাকায়। কিন্তু সেখানে কলোম্বিয়ার দাম সাড়ে পাঁচশ থেকে ৬০০ টাকায়। এই আলু দেখতে প্রায় চন্দ্রমুখীর মতো স্বাদও কাছাকাছি।
কী বলছেন চাষিরা?
বুদ্ধদেব ঘোষ বলছেন, কলোম্বিয়া অনেকটা গোলাকৃতি, চকচকে। সেখানে চন্দ্রমুখী অনেকটা ডিম্বাকৃতি। মসৃণ ভাব অনেকটা কম। সিদ্ধও হয় অন্য আলুর থেকে অনেক দ্রুত। মাখার পর তা একেবারে মোমের মতো। খেতেও খুবই সুস্বাদু। তবে বাজারে এখন অনেক বায়োটেকের চন্দ্রমুখী আলু এসেছে। সেগুলোর স্বাদ তুলনামূকভাবে একটু কম।
অন্যদিকে হেমাঙ্গিনী বা হেমা আলুও বিকোচ্ছে আবার চন্দ্রমুখী বলে। ধনেখালির চাষীরা বলছেন, আমরা কিন্তু ঠকাতে চাই না। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সমস্যা করছেন। হেমা, কলম্বিয়াকে চন্দ্রমুখী বলে বিক্রি করছেন।
জ্যোতি আলু এখন বস্তা প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকার কাছাকাছি দরে। বাজারে আলু কিনতে গিয়ে কোনটা জ্যোতি কোনটা চন্দ্রমুখী তা বুঝতে বেগ পেতে হয় অনেককেই। এলাকার আর এক চাষী নিত্যকর দাস বলছেন, জ্যোতি আলুর গায়ে একটা চিট ফাট থাকে। অন্য আলুর মতো খুব একটা মোলায়েম ভাব থাকে না। কিন্তু, চন্দ্রমুখী আলু সাধারণত একটু লম্বাটে, ছোট কালো কালো টিপ টিপ ছাপ ছাপ থাকে।
তাঁদের দাবি, বাজারের একটা বড় অংশের দখল এখন নিয়ে নিয়েছে হাইব্রিড আলু। তাতেও কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। নিত্যকর দাস বলছেন, অন্যান্য হাইব্রিড আলুতে জলের ভাব একটু বেশি থাকে। খাওয়ার সময় একটা ক্যাচক্যাচে ভাব থাকে। সাধারণ জ্যোতি আলুতে সেটা থাকে না।
প্রসঙ্গত, বর্তমানে শহরাঞ্চলে বর্তমানে নতুন চন্দ্রমুখী আলু বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে, সেখানে জ্যোতির দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি প্রতি।