হাওড়া: বন্দে ভারত রক্ষণাবেক্ষণ ডিপো এবং স্বয়ংক্রিয় ইএমইউ কোচ ওয়াশিং প্ল্যান্টের শুভ সূচনা হল হাওড়ার ঝিল সাইডিংয়ে। পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা এর উদ্বোধন করেন। পূর্ব রেলের ঝিল সাইডিং ডিপোতে এই বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মেনটেনেন্স ইউনিট তৈরি করা হয়েছে। বুধবার সকালে এই ইউনিটের উদ্বোধন হয়।
এ দিন, পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার অরুণ অরোরা বলেন, “অত্যাধুনিক এই ইউনিটে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মেইনটেনেন্সের কাজ হবে। ত্রিতল বিশিষ্ট এই কোচিং কমপ্লেক্সে ট্রেন ঢোকার পর নিচের অংশ,মাঝের অংশ এবং উপরের অংশ বিভিন্ন তল থেকে দেখা যাবে।” এ দিন, প্রথম পর্যায়ের কাজের উদ্বোধন করা হয়। খরচ হয়েছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। এরপর এই কোচিং কমপ্লেক্সের গতিশক্তি প্রকল্পে ফেজ টু এবং থ্রি পর্যায়ের কাজ হবে। খরচ হবে ১০৩ কোটি এবং ৬৪ কোটি টাকা।
পূর্ব রেলের জিএম অরুণ অরোরা জানান, “এটি পূর্ব রেলের সবচেয়ে লম্বা কোচিং কমপ্লেক্স যা আজ উদ্বোধন হল। বন্দে ভারত ট্রেন ৩০ ডিসেম্বর, ২০২২ এ উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এই ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অত্যাধুনিক ব্যবস্থা থাকার প্রয়োজন। রেলের অধীন আরবিএনএল এই কাজ করেছে। এখানে ৩ লেভেলের অত্যাধুনিক ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা সারা বিশ্বে ব্যবহার করা হয়। এখানে প্রথম দুটো ফেজে ১৪০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। দ্বিতীয় ফেজে জিএসিউ আসবে। এর জন্য ১০৩ কোটি টাকা। এটা আরও বাড়ানো হবে।”
অরুণ অরোরা বলেন, “৩য় ফেজের খরচ হবে ৬৪ কোটি টাকা। এর আগে এখানে ১০ বা ১২ কোচ রক্ষণাবেক্ষণ করা হত। এবার ১৮ কোচ রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে। এখানে প্রতিদিন বন্দে ভারত নিয়ে মোট ৫টি ট্রেন রক্ষণাবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। সাধারণভাবে ১টি রেক পরিষ্কারের জন্য ৬ হাজার লিটার জল লাগে। অটোমেটিক কোচ মেশিন প্ল্যান্টে ৭২ কিলোলিটার জল লাগে। টাকার হিসেবে প্রতিটি রেকের জন্য ৩ হাজার ১০০ টাকা বাঁচে। বছরে খরচ কমে ২০ লক্ষ টাকা।”
তিনি আরও জানান, “প্ল্যান্টের জন্য খরচ ১.৮ কোটি টাকা। এটি পরিবেশ বান্ধব ব্যবস্থা। পরিষ্কার ব্যবস্থা উন্নত। বেশি কর্মীর প্রয়োজন নেই। প্রতিটি রেক প্রায় আধ ঘন্টায় পরিষ্কার হয়ে যায়। ডানকুনির শেড এখানকার থেকে বেশি। এটা একটা নতুন কোচিং কমপ্লেক্স। এবং নতুন স্টেশন যেটা হাওড়া স্টেশনের সাহায্যকারী স্টেশন। আমাদের পরিকল্পনা কম করে ৫০টি বন্দে ভারত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পূর্ব রেলকে তৈরি রাখা হবে। প্রিভেন্টিভ মেইনটেনেন্স, পিরিয়োডিক মেইনটেনেন্স এবং প্রেডিকটিভ মেইনটেনেন্স এই ৩ ধরণের মেইনটেনেন্স হয়ে থাকে। সারা বিশ্বে প্রেডিক্টিভ মেইনটেনেন্স হয়ে থাকে। এখানে যখনই রেক ডিপোতে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নিয়ে যাওয়া হবে তখনই ডিপো কিভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে তার ডেটা তৈরি রাখে। আগে ম্যানুয়ালি সব দেখে ঠিক করা হত রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপার। এখন আগে থেকেই তৈরি থাকে ডিপো। এখন ৫টা বন্দে ভারত আছে। ধীরে ধীরে তা বাড়বে। আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে কম করে ৫০টি বন্দে ভারত চলবে। বন্দে ভারত নিয়ে সামাজিক সচেতনতা থাকা প্রয়োজন। এটা মানুষের সম্পত্তি।দেশের প্রতিটি রাজ্যে বন্দে ভারতের প্রয়োজন। তবে কোথায় এই ট্রেন দেওয়া হবে তা সিদ্ধান্ত নেবে ভারত সরকারের রেল মন্ত্রক।”