হাওড়া: দ্বিতীয় হুগলি ব্রিজের উপর রাজ্যের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় ও তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মধ্যে বচসা। যার জেরে তৈরি হয় যানজট। সাময়িক ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ। এরপরই বিষয়টি আলোড়ন ফেলে নাগরিক মহলে। সাধারণ মানুষের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন দুই জনপ্রতিনিধি কি এই ঝগড়া এড়াতে পারতেন না? এই ঘটনার একদিন পরই দুই জনপ্রতিনিধির (বাবুল সুপ্রিয় ও অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়) বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করলেন সমাজকর্মী প্রতাপ বসু। শনিবার মন্ত্রী ও সাংসদের বিরুদ্ধে ইমেইল ও স্পিড পোস্টের মাধ্যমে কলকাতা পুলিশ এবং হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
প্রতাপবাবুর বক্তব্য, সাধারণ মানুষ এই কাজ করলে পুলিশ সঙ্গে-সঙ্গে ব্যবস্থা নিত। যেহেতু তাঁর প্রভাবশালী। সেই কারণে সঙ্গে-সঙ্গে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আইনের চোখে তো সকলে সমান। তাহলে কেন পুলিশ দু’জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল না? তিনি বলেন, “দু’জনই এ রাজ্যের জনপ্রতিনিধি। একজন যান লোকসভায় অন্যজন বিধানসভায়। একজন আবার রাজ্যের মন্ত্রী। আর যিনি সাংসদ তিনি আগে বিচারপতি ছিলেন। গতকাল ওঁরা যে ঘটনা ঘটিয়েছেন। সর্বপরি যে অশ্রাব্য ভাষা আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছি সেই ভাষা সুস্থ পরিবেশ নষ্ট করে। সেই কারণে আমি অভিযোগ জানাতে বাধ্য় হয়েছি।” তিনি এও বলেছেন, “হুগলি সেতু কত গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। ওঁরা কাল কুড়ি-পঁচিশ মিনিট যানজট করে রেখেছেন। পুলিশের বড় বড় আধিকারিকরা পরবর্তী সময়ে এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেছেন। তবে এদের বিরুদ্ধে এই কারণে পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নিয়েছে? যদি সাধারণ মানুষ হতো তাহলে কী হতো? ওঁদের তো মানুষ দেখছেন। অদ্ভুত ভাবে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন বাবুল নাকি মত্ত অবস্থায় ছিলেন। কত গুরুতর অভিযোগ। আবার বাবুল সুপ্রিয় বলছেন অভিজিৎ গাড়িতে যে লোগো ব্যবহার করেছেন তা আইনত ঠিক নয়। সেই হিসাবেই বলছি পুলিশের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সমাজের বিত্তশালীরা ছাড় পাবে। আর গরিবদের বিরুদ্ধে আইন কাজে লাগবে আমি মেনে নিতে পারছি না।”
উল্লেখ্য, শুক্রবার কলকাতা থেকে হাওড়া যাচ্ছিলেন অভিজিৎ। সে সময়ে টোল ট্যাক্সের আগেই বাবুল সুপ্রিয়র সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে মন্ত্রী ও সাংসদের মধ্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। দু’পক্ষের মধ্যে বাগ বিতণ্ডা শুরু। অভিযোগ ওঠে, গালিগালাজেরও। পরে ঘটনাস্থলে যায় হেস্টিংস থানার পুলিশ। দু’জনকেই থামাতে বেশ বেগ পেতে হয় পুলিশকে। বেশ কিছুক্ষণের চেষ্টায় দু’পক্ষকে বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয় দ্বিতীয় হুগলী সেতুর হাওড়াগামী লেনে।