হাওড়া: গার্ডেনরিচের ঘটনার পর বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কড়া নির্দেশ দিয়েছে। বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা হাওড়ার এক প্রোমোটার সৌমিত্র মুখোপাধ্যায়কে বেআইনি নির্মাণের জন্য জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে বাসিন্দাদের ফ্ল্যাট ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত অবিলম্বে বিল্ডিং ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার পরই অথৈ জলে পড়েছেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। হাওড়া ব্যাটরা থানা এলাকার কালিপ্রসাদ চক্রবর্তী লেনে রয়েছে পাঁচ তলা ওই বিল্ডিং। বাসিন্দারা স্বীকার করেছেন যে ফ্ল্যাট কেনার সময় তাঁরা কাগজপত্র সেভাবে পরীক্ষা করে দেখেননি। বাসিন্দা এক মহিলা বলেন, ‘আজ সকালেই শুনলাম ভেঙে দিতে আসছে।’
বৃহস্পতিবার সকালে প্রোমোটার সৌমিত্র মুখোপাধ্যায় এই রায়ের কথা জানিয়েছেন ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদের। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, যেহেতু তাঁরা টাকা ধার করে ফ্ল্যাটটি কিনেছিলেন, সেই কারণে তাঁদের আর অন্য জায়গায় যাওয়ার কোনও রাস্তা ছিল না। এখন কী করবেন, তা তাঁরা বুঝে উঠতে পারছেন না।
এই রায়ের ব্যাপারে হাওড়া পুরসভার প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান সুজয় চক্রবর্তী জানান, ওই রায়ের কপি এখনও হাতে পাননি তিনি। তবে বিল্ডিং ডিপার্টমেন্ট থেকে তিনি জেনেছেন ওই বাড়িটির জি প্লাস ওয়ান অর্থাৎ দোতলার অনুমতি থাকলেও জি প্লাস ফোর বিল্ডিং বা পাঁচতলা বাড়ি বেআইনিভাবে তৈরি করা হয়েছে। অভিযোগ, বছর খানেক আগে হাওড়া পুরসভার কর্মীরা পুলিশ নিয়ে বেআইনি অংশ ভাঙতে গেলে তাদের বাধা দেয় প্রোমোটারের লোকজন। এরপরই দ্রুত বাড়িটি শেষ করে বিক্রি করে দেন প্রোমোটার। তাই বেআইনি অংশ ভাঙা যায়নি। এ ব্যাপারে পুরসভার গাফিলতির কথা তিনি অস্বীকার করেন সুজয় চক্রবর্তী।
শহর জুড়ে বেআইনি বাড়ি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপির হাওড়া সদরের সম্পাদক ওমপ্রকাশ সিংহ। তিনি বলেন, “হাইকোর্টের রায় নতুন দিশা দিয়েছে। কারণ শহর জুড়ে বেআইনি বাড়ির রমরমা। পুরনো বাড়ির ওপর দু-তিন তলা বাড়িয়ে নেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল কংগ্রেস পুরসভা সহ সব প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের পার্টি অফিস বানিয়ে নিয়েছে। তাই তারা যা খুশি তাই করছে।” একমাত্র কোর্টে গিয়ে মানুষ ন্যায্য বিচার পাচ্ছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন।