জলপাইগুড়ি: স্কুলে পড়ুয়া ভর্তি। কিন্তু পড়াবেন কারা? শিক্ষক শিক্ষিকাদেরই যে দেখা মেলে না সময়ে। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার ময়নাগুড়ি বার্নিশ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভান্ডানি নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ের দৃশ্য এমনই। আর সেই অভিযোগ তুলেই এদিন স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন অভিভাবক-অভিভাবিকারা। এদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা সময়ে স্কুলে না আসার কারণে অগত্যা পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে হল স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে। স্কুলের মাস্টারমশাই ও দিদিমণিদের সময়ে না আসার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পঞ্চায়েতের ওই এলাকার সদস্য পরেশ চন্দ্র দাসও। তিনি বলছেন, শনিবার শিক্ষক শিক্ষিকারা প্রায় দুপুর ১২টা নাগাদ স্কুলে পৌঁছান। আর এদিকে নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও শিক্ষক-শিক্ষিকারা কেউ না এসে পৌঁছাতেও তিনি গ্রামের কয়েকজনকে নিয়ে পড়ুয়াদের ক্লাস নেওয়া শুরু করেন।
পঞ্চায়েত সদস্য বলছেন, বিষয়টি নিয়ে এর আগেও একাধিকবার আপত্তি জানানো হয়েছিল। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা কর্ণপাত করেননি। সেই কারণেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। স্কুলের এক পড়ুয়ার অভিভাবক নিরুপমা রায় বর্মণ বলছেন, পড়ুয়াদের নাকি স্কুল থেকে বলে দেওয়া হয়েছে বেলা ১১ টা ১৫ মিনিটের আগে স্কুলে না যেতে। বলছেন, ‘শিক্ষক শিক্ষিকারা স্কুলে এসে মোবাইল খোঁচান গল্প করেন, সারাক্ষণ হাসি ঠাট্টায় ব্যস্ত থাকেন। ঠিকমতো তাঁরা ক্লাস নেন না। বাচ্চাদের পড়াশোনার দিকে তাঁদের নজর নেই। আর সেই কারণেই ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে।’
অভিযোগ আরও রয়েছে। স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের অর্ধেক ডিম দেওয়া হয়, অথচ স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকাদের দেওয়া হয় গোটা ডিম। এমনই অভিযোগ তুলছেন অভিভাবকরা। সেই অভিযোগের কথা স্বীকার করে নিচ্ছেন স্কুলের মিড ডে মিলের রান্নার দায়িত্বে থাকা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরাও। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য সরস্বতী সরকার এবং দশমী মণ্ডল জানান, সপ্তাহে দুদিন ডিম রান্না করা হয়। বাচ্চাদের অর্ধকে ডিম দেওয়া হয় আর শিক্ষক শিক্ষিকাদের গোটা ডিম দেওয়া হয়। বলছেন, শিক্ষকরাই বলেছেন এভাবে দিতে।
স্কুলের শিক্ষিকা আত্রেয়ী রায় সাফাই দিয়ে বলেন, ‘আজকে রাস্তায় জ্যাম ছিল তাই আসতে দেরি। কিন্তু আমরা অন্যান্য দিন সঠিক সময় আসি। মিড ডে মিল আমরা টাকা দিয়ে কিনে খাই।’ এদিকে এই অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ডিআই শ্যামল চন্দ্র রায়ের সঙ্গেও। তিনি অবশ্য আশ্বাস দিয়ে বলছেন, এই ধরনের অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে এবং অভিযোগ প্রমাণিত হলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।