রাজগঞ্জ: দুয়ারে সরকার প্রকল্প নয়। সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিতে এলাকাবাসীর বাড়িতে হাজির খোদ বিডিও। কাস্ট সার্টিফিকেট বা জাতি শংসাপত্র পেতে অসুবিধায় পড়েছিলেন গ্রামের বেশ কয়েকটি পরিবার। এ নিয়ে একাধিকবার স্থানীয় ব্লক প্রশাসনের দ্বারস্থও হন তাঁরা। তার পর বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হন খোদ বিডিও। তিনি নিজে গ্রামে এসে আবেদনকারীদের হাতে তুলে দেন কাস্ট সার্টিফিকেট। খোদ বিডিও এসে শংসাপত্র দিয়ে যাওয়ায় বেজায় খুশি গ্রামবাসীরা। সেই খুশির কথা গোপনও করেননি তাঁরা। রবিবার ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজগঞ্জ ব্লকের বেশ কয়েক গ্রামের বাসিন্দারা কাস্ট সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন। বেশ কয়েক বার আবেদনের পরও এই শংসাপত্র জোটেনি তাঁদের। ২০১৬-১৭ সাল থেকেই এ নিয়ে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। প্রায় ১০ হাজার জন এ নিয়ে আবেদন করেন। সম্প্রতি রাজগঞ্জের বিডিও পদে যোগ দিয়েছেন প্রশান্ত বর্মণ। কাজে যোগ দিয়ে তিনি এই সমস্যার কথা জানতে পারেন। অফিসে গিয়ে দেখেন, কাস্ট সার্টিফিকেটের জন্য আবেদনের পাহাড় জমে রয়েছে। তাঁর পর নিজে উদ্যোগী হয়ে যোগাযোগ করেন মহকুমা শাসকের সঙ্গে। জলপাইগুড়ি সদর মহকুমাশাসক তমজিৎ চক্রবর্তী বিষয়টি অবগত হবার পর যোগাযোগ করেন জেলাশাকের সাথে। অতি দ্রুততার সাথে বিষয়টি খতিয়ে দেখবার পর অবিলম্বে শংসাপত্র প্রদানের নির্দেশ দেন জেলাশাসক শামা পারভিন। এর পরই প্রথম পর্যায়ে ৫ হাজার জনের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে জাতিগত শংসাপত্র। এ রকমই বেশ কয়েক জন প্রাপকের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছিলেন বিডিও। রাজগঞ্জের পানিকৌরি, সুখানি, মাঝিয়ালি-সহ বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতের আবেদনকারীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাতে হাতে শংসাপত্র তুলে দিয়েছেন তিনি।
বিডিও নিজে এসে কাস্ট সার্টিফিকেট দিয়ে যাওয়ায় খুশি স্থানীয় বাসিন্দারা। ফাটাপুকুর এলাকার বাসিন্দা মণি দাস শংসাপত্র পেয়ে বলেছেন, “কাস্ট সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য অফিসে গিয়ে ঘুরে এসেছিলাম। হয়রানির শিকার হচ্ছিলাম। এবার বিডিও সাহেব বাড়িতে এসে সার্টিফিকেট দিয়ে গেলেন। এই পরিষেবা পেয়ে আমি খুবই আনন্দিত।”
এ বিষয়ে বিডিও প্রশান্ত বর্মণ বলেছেন, “আমি কাজে যোগ দিয়ে দেখতে পাই রাজগঞ্জ ব্লক অফিসে প্রায় হাজার দশেক কাস্ট সার্টিফিকেটের আবেদন পত্র জমে রয়েছে। এর পর বিষয়টি আমি এসডিও সাহেবের নজরে আনি। এরপর জেলাশাসকের বিশেষ উদ্যোগে প্রথম পর্যায়ে প্রায় ৫০০০ হাজার মানুষ সার্টিফিকেট পাচ্ছেন। বাকিগুলোও অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই সার্টিফিকেটগুলি একদিকে আমি যেমন তাঁদের হাতে পৌঁছে দিচ্ছি। পাশাপাশি তাঁরাও ইচ্ছে করলে বাংলা সহায়তা কেন্দ্রগুলি থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করতে পারবেন।”