জলপাইগুড়ি: তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর স্বামীর মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়ায় জলপাইগুড়িতে। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান অপর্ণা ভট্টাচার্য ও তাঁর স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় এবার প্রভাবশালী তৃণমূল নেতাকে কাঠগড়ায় তুলে অভিযোগ দায়ের করলেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। রবিবার জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় পুরসভার বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ সহ চারজনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়।
শনিবার জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ার বাসিন্দা অপর্ণা ভট্টাচার্য ও তাঁর স্বামী সুবোধ ভট্টাচার্যের অস্বাভাবিক মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় বিষের শিশি এবং চারপাতার সুইসাইড নোট। সুইসাইড নোটে মৃত্যুর জন্য ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়, কাউন্সিলর সন্দীপ ঘোষ সহ চারজনকে দায়ি করেন করেন দম্পতি।
রবিবার দুপাশে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি অভিযুক্তদের ছবি এবং সুইসাইড নোটের কপি সংবাদ মাধ্যমের সামনে তুলে ধরে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান বিজেপির বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। বিধায়কের দাবি, জলপাইগুড়ি শিশু পাচার কাণ্ডের পর্দাফাঁস করেছিলেন তাঁর ভাই সুবোধ ভট্টাচার্য। তার অভিযোগের ভিত্তিতে হোমের কর্নধার চন্দনা চক্রবর্তী এখন জেলে। ওই অভিযোগ পত্রে সৈকত চ্যাটার্জীর নাম ছিল। নেত্রীর অভিযোগ, সেইসময় সৈকত তাঁর প্রভাব খাটিয়ে মামলা থেকে পাশ কাটিয়ে যান।
বিজেপি নেত্রীর অভিযোগ, এরপর থেকেই সৈকত চ্যাটার্জীরা তাঁর ভাইয়ের উপর বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করেছে। যা সুইসাইড নোটে উল্লেখ রয়েছে। এর ফলস্বরূপ তাঁর ভাই ও ভাইয়ের বৌকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁদের উপর চাপ সৃষ্টি করে বাড়ির দলিল, ব্ল্যাঙ্ক চেকে সই করিয়ে নিয়েছে এই তৃণমূল নেতারা। ওই নোটে এমনটাই উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিখা চট্টোপাধ্যায়।
পরে সাংবাদিক সম্মেলনে পাল্টা সুইসাইড নোটের হাতের লেখা এবং এই ঘটনায় শিখা চট্টোপাধ্যায়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি সুইসাইড নোটের হাতের লেখা অপর্ণা ভট্টাচার্যর নয়। একই সঙ্গে গতবছরের একটি অভিযোগ প্ত্র সামনে এনে সৈকত চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, শিখা চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখে পুরসভায় চাকরি দেওয়ার টাকা তুলেছিলেন অপর্ণা ভট্টাচার্য। অভিযোগ পত্রে শিখা চট্টোপাধ্যায়ের নাম রয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
অন্যদিকে ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিজেপি। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামীর দাবি পুলিশ এই ঘটনাকে আড়াল করার চেষ্টা চালাবে। সেই কারণে আদালতের মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং সিবিআই তদন্তে র দাবি জানাবেন তারা।