Jalpaiguri : ‘রঞ্জিতদার কথা না শুনলে প্রাণ সংশয় আছে’, অতিরিক্ত জেলা শাসককে প্রাণনাশের হুমকি

Jalpaiguri : জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে দুজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি জলপাইগুড়ি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের অতিরিক্ত জেলাশাসক রঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে তাঁর ঘরে ঢোকেন। তারপরেই তাঁকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।

Jalpaiguri : ‘রঞ্জিতদার কথা না শুনলে প্রাণ সংশয় আছে’, অতিরিক্ত জেলা শাসককে প্রাণনাশের হুমকি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 31, 2023 | 12:02 AM

জলপাইগুড়ি : এডিএম-র চেম্বারে ঢুকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে পালিয়ে গেল দুই অজ্ঞাত পরিচয় ব্যাক্তি। তাঁর দফতরের এস্টাবলিশমেন্ট সেকশনের কাচের জানালা ও আলমারিতে দেখতে পাওয়া গেল গুলির চিহ্ন। যা নিয়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রশাসনিক মহল ও অফিস কর্মীদের মধ্যে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দপ্তরের এডিএম রঞ্জন চক্রবর্তী। ঘটনার তদন্ত করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ব্যালেস্টিক এক্সপার্টদের তলব করলেন জেলা পুলিশ সুপার। 

জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে দুজন অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি জলপাইগুড়ি ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের অতিরিক্ত জেলাশাসক রঞ্জন চক্রবর্তীর সঙ্গে দেখা করবেন বলে তাঁর ঘরে ঢোকেন। অভিযোগ এরপর তারা অতিরিক্ত জেলাশাসকের হাতে একটি তালিকা ধরিয়ে দিয়ে বলেন, এটি রঞ্জিতদার তালিকা। এই তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের নদীর চর এলাকায় পাট্টা দিতে হবে। তাঁদের দাবি মানতে না চাইলে খুনের হুমকি দেওয়া হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক রঞ্জন চক্রবর্তী বুধবার বুধবার বিকেলে জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নামে পুলিশ। 

ঘটনায় পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে জানান, অতিরিক্ত জেলা শাসকের দফতরে দুজন ব্যক্তি ঢুকে তাঁকে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। জেলা শাসকের দফতরের সিসিটিভির ফুটেজও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। পাশাপাশি গুলির চিহ্ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটা বৈজ্ঞানিকভাবে তদন্ত করে দেখা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা ফরেনসিক দপ্তরের ব্যালেস্টিক বিশেষজ্ঞদের সাহায্য চেয়েছি। তাঁরা কলকাতা থেকে তদন্ত করতে আসবেন।

কে এই রঞ্জিত দা তা নিয়ে আজ অফিস কর্মীদের মধ্যে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলেও শুরু হয়েছে চাপানউতর। অতিরিক্ত জেলাশাসকের গাড়ির চালক গোকুল লামা বলেন, “সেদিন আমি নিচে বসেছিলাম। দুজন এল। সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠে গেল। একটু পরে আবার তাঁরা নিচে নেমে এসে আমার দিকে তাকাচ্ছিল। আমি তাঁদের দিকে তাকাতেই তাঁরা চলে যায়। ওদের আমি চিনি না। পরে সাহেবের কাছ থেকে জানতে পারলাম প্রাননাশের হুমকি দিয়েছে। আমি ছোট থেকে এই শহরে বড় হয়েছি। এই জাতীয় ঘটনা কোনওদিন শুনিনি।” দফতরের কর্মী শ্যামল মণ্ডল বলেন, “জানালার কাঁচে এবং আলমারিতে গুলি লাগার মতো চিহ্ন রয়েছে। তবে কখন এইসব হয়েছে তা আমি বলতে পারব না।” 

তৃনমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “এই ঘটনা আমাকে জেলাশাসক জানিয়েছেন। জলপাইগুড়ি জেলায় এই জাতীয় ঘটনা শুনে আমি নিজেই অবাক হয়ে গেছি। এই জাতীয় ঘটনাকে তৃণমূল বরদাস্ত করেনা। আমি পুলিশ সুপারকে বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করতে বলেছি।” ঘটনা নিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী। তিনি বলেন, “প্রশাসনের হেড কোয়ার্টারে ঢুকে একজন অতিরিক্ত জেলাশাসককে প্রাননাশের হুমকি, তাঁর অফিসে গুলি ছোড়ার মতো ঘটনা সামনে আসার পর বোঝাই যাচ্ছে এই রাজ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নেই।”