জলপাইগুড়ি: ভাতা চেয়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে ১২ ঘণ্টা ধরে অবস্থান বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। দিন পেরিয়ে রাত হলেও দেখা পেলেন না জেলাশাসকের। উল্টে জুটল পুলিশের হুমকি। ঘটনায় নিন্দার ঝড় জলপাইগুড়িতে। অভিযোগ, উপভোক্তাদের আইডি হলেও এখনও পর্যন্ত বৃদ্ধ বা বিধবা ভাতার টাকা পাননি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ঘুরেও কাজ হচ্ছে না। তাই দ্রুত ভাতা প্রদানের দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জলপাইগুড়ি জেলা শাসকের দফতরের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন বয়স্ক উপভোক্তারা।
জানা গিয়েছে, এদের কেউ এক বছর, কেউ তিন বছর, এমনকি কারও পাঁচ বছর আগে আইডি হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ভাতা পায়নি। তাই এবার আগাম নোটিশ দিয়ে জেলাশাসকের দফতরের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন। এদিন রাত প্রায় ৯ টা পর্যন্ত জেলা শাসকের দপ্তরের সামনে বৃষ্টিতে ভিজে অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে গেলেও কোন আধিকারিক দেখা করতে আসেনি। উল্টে রাতে দিকে পুলিশ দিয়ে অবস্থান তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
অপরদিকে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের এই অসহায় অবস্থার খবর পৌঁছে যায় জলপাইগুড়ি নাগরিক সংসদের সদস্যদের কাছে। তারা রাতেই ছুটে আসেন। পরে তাঁদের অনুরোধে অবস্থান তুলে বাড়ি ফিরে যান বয়স্করা। ঘটনায় এলাকার পঞ্চায়েত গনেশ ঘোষ বলেন, “এই বয়স্ক মানুষদের হয়ে আমি আগাম নোটিস দিয়েছিলাম। তারপর আজ এখানে এসেছেন এরা। কিন্তু, আমাদের দুর্ভাগ্য এরা সারাদিন ধরে বৃষ্টিতে ভিজলেন। রাতেও বৃষ্টিতে ভিজলেন। এদের উঠিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ এসে হুমকি দিল। এডিএম এসেছিলেন। কিন্তু আমরা চেয়েছিলাম ডিএম এর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে। কিন্তু জেলাশাসক এদের সঙ্গে দেখা করলেন না।”
নাগরিক সংসদের সভাপতি ডাক্তার পান্থ দাশগুপ্ত বলেন, “প্রশাসনের অমানবিক চেহারা আরও একবার দেখলাম। এই বয়স্ক মানুষেরা প্রায় ১২ ঘন্টা ধরে বৃষ্টিতে ভিজলেন। কিন্তু জেলাশাসক এদের সঙ্গে দেখা করার প্রয়োজন বোধ করলেন না। এর থেকে খুব সহজেই প্রশাসনের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝা যায়।” যোগাযোগ করা হয়েছিল তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার প্রাক্তন জেলা সভাপতি তথা জেলা পরিষদের মেন্টর চন্দন ভৌমিকের সঙ্গে। তিনি শুধু জানালেন, কেন এমন হল তা নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে। এদিকে ভাতার এই বিষয় নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি কৃষ্ণা রায় বর্মন জানান, ভাতা দেওয়ার সমস্ত কিছুই রেডি করা আছে। রাজ্য থেকে নির্দেশ এলেই ভাতা দেওয়ার কাজ শুরু করা হবে।