জলপাইগুড়ি: বাসে তুলে দিয়েছিল পুলিশ। সে প্রায় সাত মাস আগের কথা। এখনও বাড়ি ফেরেনি সেই মেয়ে। হন্যে হয়েছে খুঁজেছে সবাই, কেউ কিছু বলতে পারেনি। দিনমজুরের ঘরে যেন শুধুই অন্ধকার। পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীনই রহস্যজনকভাবে ওই যুবতী নিখোঁজ হয়ে যান বলে অভিযোগ। তাঁকে দ্রুত খুঁজে বের করতে দুই জেলার পুলিশ সুপারকে সিট গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ।
জলপাইগুড়ি পান্ডা পাড়ার বাসিন্দা পিন্টু রায়। তিনি পেশায় তিনি দিনমজুর। ভ্যান-রিক্সা চালিয়ে দিন চালান তিনি। গত এপ্রিল মাসে তাঁর মেয়ে মেয়ে রাখী রায় (২৭) নিখোঁজ হয়ে যায়। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। এরপর পিন্টু রায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন।
পরিবারের তরফে অভিযোগ, গত সাত মাস আগে আলিপুরদুয়ার মহিলা থানা তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে। রাতেই বাড়িতে ফোন করে সে কথা জানায় পুলিশ। পরেরদিন সকালে মেয়েকে নিতে আলিপুরদুয়ার থানায় পৌঁছলে পুলিশ জানায় রাতেই মেয়েকে বাসে তুলে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর দীর্ঘ সাত মাস কেটে গেলেও মেয়ে বাড়ি ফেরেনি। রাখী রায় আজও রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ।
রাখীর বাবা বলেন, ‘আর কত খুঁজব। আমাদের দিন যে কীভাবে কাটছে। যেমনই হোক, মেয়ে তো আমার। ফেলে দিতে পারি! কখনই পারব না।’
দীর্ঘ সময় ধরে কোনও সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে ‘লিগ্যাল রাইটস প্রোটেকশন অর্গানাইজেশন’-এর সহযোগিতায় দরিদ্র ভ্যানচালকের পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের দ্বারস্থ হয়। এরপর গত ২৬ নভেম্বর উভয়পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি শম্পা সরকার ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
আদালতের প্রশ্ন, কেন মানসিক ভারসাম্যহীন একজন যুবতীকে উপযুক্ত নিরাপত্তা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে না দিয়ে বাসে তুলে ছেড়ে দেওয়া হল? এই সিদ্ধান্তে পুলিশের সমালোচনাও করে ডিভিশন বেঞ্চ। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার এই দুই জেলার পুলিশ সুপারকে সিট গঠন করে দ্রুত রাখী রায়কে খুঁজে বের করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।