জলপাইগুড়ি: ট্যাব কেলেঙ্কারিতে একে একে নাম জড়িয়েছে একাধিক স্কুলে প্রধান শিক্ষকের। কিন্তু কোনও অভিযোগ উঠলেই শিক্ষা দফতরের তরফে কোনও তদন্ত না করেই কেন প্রধান শিক্ষক বা শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে সরাসরি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। প্রধান শিক্ষকদের দাবি, তাঁদের ফাঁসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাঁদের সামাজিক সম্মানহানি হচ্ছে।
ট্যাব ইস্যুতে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে এবার পালটা গর্জন শোনা গেল বামপন্থী প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গলায়। ‘তরুণের স্বপ্ন’ প্রকল্প তথা ট্যাব-দুর্নীতির ঘটনায় অকারণে প্রধান শিক্ষকদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবির পাশাপাশি আগামীতে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি(ABTA)।
ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে জলপাইগুড়ির শিক্ষা ভবনে ডিআই কে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ওই সংঠনের সদস্যরা। স্মারকলিপিও দেওয়া হয় সংগঠনের তরফে। ট্যাব দুর্নীতির পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা।
জলপাইগুড়ি কদমতলা বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রীতা রায় সেনগুপ্ত বলেন, “অনেকের কে ওয়াই সি (KYC) আপডেট না করার ফলে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডরমেন্ট হয়ে থাকে। সেই ক্ষেত্রে তারা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা ঢোকার মেসেজ পায় না। এছাড়া কারও অ্যাকাউন্ট লিয়েন হয়ে গেলেও সে টাকা তুলতে পারে না।” পাশাপাশি ক্ল্যারিক্যাল মিসটেকের কথাও বলেছেন তিনি।
শিক্ষিকার দাবি, কেবলমাত্র ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাঙ্কের IFSC কোড এই দুই তথ্যের ভিত্তিতে টাকা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে অ্যাকাউন্ট নম্বরের একটা সংখ্যা এদিক ওদিক হলেই টাকা অন্যের অ্যাকাউন্ট চলে যাচ্ছে। আর তা হলেই মামলা রুজু করে দেওয়া হচ্ছে প্রধান শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
শিক্ষক-শিক্ষিকারা চাইছেন, ফর্মে যেন পড়ুয়ার নাম ও আঁধার কার্ডের নম্বর, দুটোই দেওয়ার অপশন থাকে। তাহলে টাকা সঠিক জায়গায় যাবে বলে মনে করছেন তিনি।
ABTA-র জেলা সম্পাদক প্রসেনজিৎ রায় বলেন, “সরকারি পোর্টালগুলি সাইবার সেফ নয়। ফলে হ্যাকিং হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি যে সব স্কুলে গরমিল পাওয়া যাচ্ছে সেইসব স্কুলে ডিপার্টমেন্টাল এনকোয়ারি না করেই প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযুক্ত করে তাদের নামে অভিযোগ দায়ের করা হচ্ছে।”
জলপাইগুড়ি-র ডিআই বালিকা গোলে জানিয়েছেন, জেলায় ট্যাব দুর্নীতি নিয়ে সরাসরি কোনও অভিযোগ আসেনি। তবে একাধিক স্কুলের পড়ুয়ারা এখনও অ্যাকাউন্টে ট্যাবের টাকা পায়নি বলে অভিযোগ জানিয়েছে। সমস্ত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রধান শিক্ষকদের দাবিগুলিও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।