Jalpaiguri: স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে গেলে প্রথমেই পাঁচ হাজার টাকা, রোজ ২০ টাকা! টোটোওয়ালাদের ‘তোলা’র ফর্দ শুনে ভিড়মি খাচ্ছেন ‘হাইকম্যান্ড’

Nileswar Sanyal | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jul 16, 2024 | 1:58 PM

Jalpaiguri: জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতেও বলেন। জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এমন মারাত্মক অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি তপন। বিভিন্ন ব্লক থেকে রিপোর্ট আসার পর তাঁর ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়।

Jalpaiguri: স্ট্যান্ডে দাঁড়াতে গেলে প্রথমেই পাঁচ হাজার টাকা, রোজ ২০ টাকা! টোটোওয়ালাদের তোলার ফর্দ শুনে ভিড়মি খাচ্ছেন হাইকম্যান্ড
টোটো নিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

জলপাইগুড়ি: মোটা টাকা দিলে তবে মিলবে টোটো চালানোর ছাড়পত্র। টোটো চালকদের কাছ থেকে তোলাবাজির অভিযোগ তৃণমূল শ্রমিক নেতাদের বিরুদ্ধে। তৃনমূল শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিকেই  অভিযোগ করলেন খোদ তৃণমূল জেলা সভাপতি। অস্বস্তিতে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব।

জানা যাচ্ছে, মাস ছয়েক আগে INTTUC এর জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছেন তৃণমূল শ্রমিক নেতা তপন দে। দিন দুয়েক আগে তাঁকে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি মহুয়া গোঁপ টেলিফোনে অভিযোগ করে বলেন, জলপাইগুড়ি জেলার বিভিন্ন ব্লকে তৃণমূলের টোটো সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে টোটো চালকদের কাছ থেকে চাপ দিয়ে টাকা তোলা হচ্ছে। সামনেই একুশে জুলাই, সেখানে টোটো লাগবে। পাশাপাশি রুটে টোটো চালাতে গেলেও মোটা টাকা তোলা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। আর এর জেরে অনেক টোটো চালক তৃণমূল ছেড়ে অন্য সংগঠনের দিকে ঝুঁকছেন বলে দাবি নেতৃত্বেরই।

জানা যাচ্ছে, জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দ্রুত রিপোর্ট জমা দিতেও বলেন। জেলার শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এমন মারাত্মক অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামেন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি তপন। বিভিন্ন ব্লক থেকে রিপোর্ট আসার পর তাঁর ভিড়মি খাওয়ার জোগাড়। তিনি জানতে পারেন ময়নাগুড়ি, নাগ্রাকাটা প্রভৃতি ব্লকের বিভিন্ন রুটে ছোট ছোট সিন্ডিকেট তৈরি হয়েছে। যেখানে বিভিন্ন কায়দায় টোটো চালকদের কাছ থেকে তোলা আদায় করা হচ্ছে।

কীভাবে সিন্ডিকেট তৈরি? কীভাবে হচ্ছে তোলা আদায়?
যে সব অভিযোগ উঠেছে…

১) কেউ যদি নতুন টোটো কিনে স্ট্যান্ডে এসে যাত্রী নিতে যান, প্রথমেই তাঁকে ১৫০০ থেকে ৫০০০টাকা পর্যন্ত তোলা দিয়ে ওই নির্দিষ্ট স্ট্যান্ডে নাম লেখাতে হবে।  এরপর রুট পারমিট দেওয়া হবে। নইলে যাত্রী নিয়ে ওই রুটে যাতায়াত করতে পারবে না।

২) প্রতি মাসে চাঁদা দিতে হবে।

৩) ২১ শে জুলাই সহ তৃনমূলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে চাঁদা দিতেই হবে। নইলে টোটো চালাতে পারবে না।

৪) কোনও স্ট্যান্ডে দিনে ২০ টাকা  করে দিতে হবে।

প্রাথমিক একটি রিপোর্ট বলছে, জলপাইগুড়ি জেলায় অন্তত ৭০ হাজার মানুষ টোটো চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন।  জয়ন্ত সরকার নামে ময়নাগুড়ির এক টোটো চালক বলেন, “আজ থেকে আট বছর আগে ঋণ নিয়ে টোটো রিক্সা কিনেছিলাম। এরপর স্ট্যান্ডে ১৬৫০টাকা  চাঁদা দিতে হয়েছিল।নইলে টোটো চালাতে দেওয়া হতো না।”

তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের ময়নাগুড়ি অবজারভার সুনিল রাউত বলেন, “ময়নাগুড়িতে টোটো চালকদের বেশ কয়েকটি ইউনিট রয়েছে। এই ইউনিট গুলির অধীনে রয়েছে একেকটি রুট। যে কোনও রুটে কেউ যদি নতুন টোটো নিয়ে পথে নামে তবে আগে মোটা টাকা জমা দিতে হবে। তারপর ওই রুটে টোটো চালাতে দেওয়া হয় বলে আমরা জানতে পেরেছি। যারা এইভাবে সংগঠনের নামে টাকা আদায় করে তৃণমূলকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে আমরা তাঁদের চিহ্নিত করেছি। এদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানানো হবে।”

ময়নাগুড়ির তৃণমূল টোটো ইউনিয়নের  যে শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই অভিজিৎ সরকার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি  বলেন, “হ্যাঁ আমরা টাকা নিয়েছি। কিন্তু সেই টাকা দিয়ে টোটো চালকদের ওয়েলফেয়ার করা হয়।”

INTTUC জেলা সভাপতি তপন দে বলেন, “ময়নাগুড়ি, নাগরাকাটা প্রভৃতি ব্লকে টোটো চালকদের কাছ থেকে ২১ জুলাইয়ের নামে টাকা আদায় করা হচ্ছে। যা দলের নিয়ম বহির্ভূত। রাজ্য বা জেলা কমিটি কাউকে টাকা তুলতে বলেনি।”

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপী গোস্বামী বলেন, “তৃণমূলের সারা বছর ২১ শে জুলাই। তাঁদের যে কোনও কায়দায় তোলা তুলতেই হবে। আমরা এইসব নিয়ে বহুবার প্রশাসনের দারস্থ হয়েছি। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।”

Next Article