জলপাইগুড়ি: প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যা ছিল। চিকিৎসক দেখিয়েছিলেন। কিন্তু ওষুধ খেতেই বিপত্তি। ওষুধ খাওয়ার পরই শুরু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ১৬ ঘণ্টা ধরে ঋজু হয়ে রইল পুরুষাঙ্গ। রক্ত সঞ্চালনই হল না। পরিস্থিতি এমনই হল, অপারেশন করাতে হল মাঝ বয়সী ওই ব্যক্তিকে। বর্তমানে সুস্থ তিনি। জলপাইগুড়ির রাজবংশী এলাকার এই ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
বিষয়টি ঠিক কী ঘটেছিল?
জানা যাচ্ছে, বুধবার রাতে জলপাইগুড়ি রাজবাড়ি সংলগ্ন একটি নার্সিংহোমে যান ওই রোগী। তিনি তখন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। চিকিৎসকরা দেখেন, তাঁর পুরুষাঙ্গে রক্ত চলাচল করছে না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘ইসচেমিক প্রায়াপিসম’। যার জেরে রোগীর গত ১৬ ঘণ্টা ধরে পুরুষাঙ্গে ‘পেইনফুল ইরেকশন’ হচ্ছিল।
চিকিৎসকরা জানতে পারেন, ওই ব্যক্তি অবিবাহিত। এবং তাঁর বাড়ির সব লোক জেলার বাইরে থাকেন। ওই ব্যক্তি একাই থাকতেন। বুধবার সকালে ঘুম থেকে ওঠা থেকে প্রায় ১৬ ঘণ্টা অসহ্য যন্ত্রনা সহ্য করেছিলেন। রাতে আর যন্ত্রণা সইতে না পেরে, তিনি একাই নার্সিংহোমে যান।
নার্সিংহোমের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সুমন্ত্র মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই রোগী আসার পর আমরা তাঁর চিকিৎসার সময়ে জানার চেষ্টা করি, কেন তাঁর পুরুষাঙ্গে পেইনফুল ইরেকশন হচ্ছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারি, ওঁর প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যার জন্য একটি ওষুধ খান। এরপর আরও কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষার পর আমরা নিশ্চিত হই এটা ওই ওষুধের অতি বিরল পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। এরপর আমরা চিকিৎসা শুরু করি।”
সার্জেন তুহিন শুভ্র মণ্ডল জানান, রোগীর মূল সমস্যা ছিল ‘ইসচেমিক প্রায়াপিসম।’ ফলে রোগীর পুরুষাঙ্গে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ওঁর প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের সমস্যার জন্য একটি ওষুধ খেতেন। এটা তাঁর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। ওষুধের জন্য এই জাতীয় পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত বিরল।
চিকিৎসক পরামর্শ দিয়েছেন, এই জাতীয় সমস্যা হলে চার ঘণ্টার মধ্যে রোগীর অপারেশন করতে হয়। কিন্তু এই রোগীর ১৬ ঘণ্টা পার হয়ে গিয়েছিল। তাই চিকিৎসকরাই বলছেন, এই ব্যক্তির অপারেশন যথেষ্টই ‘চ্যালেঞ্জিং’ ছিল। তবে অপারেশন সফল হয়েছে। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ১৬ ঘণ্টা রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই ব্যক্তির পুরুষাঙ্গে কিছু ক্ষতি ইতিমধ্যে হয়ে গিয়েছে। তবে যে সমস্যা ছিল, তা মিটেছে। বর্তমানে নার্সিংহোমেই চিকিৎসাধীন ওই ব্যক্তি।