জলপাইগুড়ি: এবার পুজো জেলেই কাটাতে হবে যুব তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি তথা জলপাইগুড়ি পৌরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে। বুধবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেয় জলপাইগুড়ি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালত। আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত তাঁকে জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিলেন বিচারক। ১ নভেম্বর ফের এই মামলার শুনানি হবে। এক সমাজ সেবী দম্পতিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে নাম জড়ায় এই তৃণমূল নেতার। এরপর গ্রেফতার হন তিনি। এ দিকে, জেলে যাওয়া মাত্রই ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন সৈকত। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ভর্তি করা হল জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে।
গতকাল মামলার দীর্ঘ শুনানির পর বিচারক প্রধান অভিযুক্ত সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিকে, বিচারকের সঙ্গে সৈকত ধমকের সুরে কথা বলছেন বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন বিজেপি বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত থেকে বেরিয়ে যান ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির বিধায়ক। মামলার শুনানির জন্য এদিন জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে এসেছিলেন মৃতদের আত্মীয় ও মামলাকারী বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়। শুনানি শেষ হওয়ার আগেই আদালত থেকে বেরিয়ে যান তিনি।
যাওয়ার সময় সাংবাদিকদের বলেন,”এই মামলার প্রধান অভিযুক্ত সৈকত চট্টোপাধ্যায় এতটাই প্রভাবশালী যে বিচারককেও ধমকে দিচ্ছেন তিনি। চোখ রাঙিয়ে কথা বলছেন বিচারককে। এমনকী আদালতে সাজানো মিথ্যে কথা বলছেন সৈকত। তবে আইন ও আদালতের প্রতি আস্থা রয়েছে আমার। বিচারক বিচক্ষণ ব্যক্তি। তিনি নিশ্চয়ই সঠিক রায় দেবেন।” যদিও, সৈকত চট্টোপাধ্যয় বলেন,”আমি আমার নিজের মামলা নিজেই লড়েছি। অন্যান্য আইনজীবীরাও ছিলেন আমার সঙ্গে। বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায় আদালতে এসে সিনক্রিয়েট করার চেষ্টা করেছেন। তবে আইনের ওপর আমার ভরসা রয়েছে।”
এদিন রাত ৮ টা নাগাদ রায়দান করেন বিচারক। সরকারি আইনজীবী মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। তাঁকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। রায়দানের পর সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবী সন্দীপ দত্ত বলেন, “আদালতের রায়ে আমার মক্কেল সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আমরা বৃহস্পতিবার এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ফের আদালতের দারস্থ হব।”
অপরদিকে বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ সৈকত চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে যায় জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে। সেখানে তিনি অসুস্থ হলে তাঁকে নিয়ে আসা হয় জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে। ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয় বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ডাক্তার কল্যান খাঁ।