ময়নাগুড়ি: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নিবিড় জনসংযোগে নেমেছেন তৃণমূলের (Trinamool Congress) সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Abhishek Banerjee)। দুই মাস ধরে জেলায় জেলায় বুথে বুথে ঘুরবেন তিনি। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অভিষেকের সেই জনসংযোগ যাত্রা। নিত্যদিন ঠাসা কর্মসূচি। নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে প্রতিদিনই মিশে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। আর এবার খোলা আকাশের নীচে গ্রামবাসীদের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ সারবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ময়নাগুড়ির দোমহানি গ্রামে শনিবারের এই আয়োজন ঘিরে সাজো সাজো রব। উল্লেখ্য, বিগত বছরগুলির ভোট পরিসংখ্যানের হিসেবের দিকে নজর রাখলে বোঝা যাবে, এই এলাকা নিয়ে বেশ অস্বস্তিতে রয়েছেন রাজ্যের শাসক শিবির। কারণ, শুধুমাত্র ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেই নয়, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ময়নাগুড়ি বিধানসভা দখলে রেখেছে বিজেপি।
রাজ্য রাজনীতির কারবারিদের একাংশের মতে, উত্তরবঙ্গের অনেকটা অংশ জুড়ে এখনও জমি ধরে রেখেছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। তাই এবার দলীয় অভিযানে এসে গ্রামের প্রত্যন্ত মানুষের সঙ্গে নিবিড় জনসংযোগের উপর জোর দিচ্ছেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। এর পাশাপাশি বিজেপিকে ঠেকাতে এবার রাজবংশী আবেগেও শান দিতে চাইছেন অভিষেক। অন্তত এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তৃণমূলের নবজোয়ারে জনসংযোগ যাত্রায় নেমে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে মিলিত হচ্ছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত সারিন্দা শিল্পী মঙ্গলা কান্ত রায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। উল্লেখ্য, রাজবংশী মানুষজনের সঙ্গে ভাওয়াইয়া গান এবং সারিন্দা বাদ্য যন্ত্র আবেগের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। অভিষেক তৃণমূলে নবজোয়ার যাত্রার সফরে এসে দলীয় কর্মসূচির ফাঁকেই জেলার সাধারণ মানুষ এবং জেলা সংস্কৃতির সঙ্গে নিবিড় ভাবে মিশে যাচ্ছেন।
গত লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে অত্যন্ত খারাপ ফল করেছিল তৃণমূল। যার অন্যতম কারণ হিসেবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন গত পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন দাখিল করতে বাধা, নিজের লোকেদের ভোট দিতে না দেওয়া ও ব্যাপক রিগিং। যা আগে কোনওদিন উত্তরবঙ্গের মানুষ দেখেনি।
লোকসভায় হারের পর ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে ময়দানে নামেন খোদ নেত্রী। পাশাপাশি ছিলেন অভিষেক। দফায় দফায় উত্তরবঙ্গ সফর করে খানিকটা ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে পেরেছিলেন। ফলে গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি আশানুরূপ ফল করতে পারেনি। এরপর গত পৌরসভা নির্বাচনেও বিজেপি হালে পানি পায়নি। ২০২৪ সালের ভোটকে মাথায় রেখে বিজেপির পালে হাওয়া দিতে আসরে নেমেছে আরএসএস। চলে যাওয়া রাজবংশী এবং আদিবাসী ভোট ফিরিয়ে আনতে নিতে শুরু করে একাধিক সামাজিক পদক্ষেপ। এরই মধ্যে অভিষেকের এই কর্মসূচি স্বাভাবিকভাবেই যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।