জলপাইগুড়ি: সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। আর ভোটের মুখে জলপাইগুড়িতে দোকান খুললেন বাম কংগ্রেস জোট। সেই দোকানে সাইনবোর্ড লাগালেন। নাম রেখেছেন ‘ভালবাসার দোকান’। অবাক করা এই দোকানে কিন্তু কেনা-বেচা হবে না। তার বদলে ওই দোকান থেকে ভাব ভালোবাসা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তা প্রচার করা হচ্ছে। আর এই নির্বাচনী কার্যালয় এখন চর্চার কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত হয়েছে। রীতিমতো জল্পনা শুরু হয়েছে জলপাইগুড়িতে। সেখানে খড়িয়া গ্রামপঞ্চায়েতের শানু পাড়ায় এই দোকান খোলা হয়েছে। হাত চিহ্ন প্রতীক নিয়ে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী গণেশ ঘোষ।
গণেশবাবুর ‘ভালবাসার দোকানে’ এখন নিয়মিত আড্ডা জমাচ্ছেন এলাকার লোকজন। নির্বাচনী কার্যালয় থেকে ভাব ভালোবাসার সৌজন্য বিনিময়ের পাশাপাশি পরিবেশ নিয়ে সচেতনতার প্রচার চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী গণেশ ঘোষ। এহেন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশ কর্মীরা। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে কর্মী সমর্থকদের নিয়েও গণেশবাবু বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাচ্ছেন। সেখানেও তিনি অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলির মতো গতানুগতিক প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন না। বদলে তিনি এলাকার মানুষকে অহিংসা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তা দিচ্ছেন।
তবে রাজনীতি তো থাকবেই। তৃণমূল কংগ্রেস শিবির বলছে, ভালই হল। এবার থেকে বাজার থেকেই ভালবাসা কিনতে পাওয়া যাবে। নেত্রী টুম্পা রায়ের বক্তব্য, “আমরা কিলোদরে কিনব। আসলে এসব চমক ছাড়া আর কিছু নয়। তৃণমূলের উন্নয়নের পাশে এরা রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে দাঁড়াতে পারবে না। তাই চমক দিয়ে আসর মাত করতে চাইছে। তবে এতে আদতেও কোনও লাভ হবে না। এই এলাকায় তৃণমূল ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। তাই জোট ঘোট করে যতই করে ভোটে লড়ুক এবারেও ভোটে জিতবে তৃণমুল।”
তবে বিরোধীপক্ষ যাই বলুক না কেন স্থানীয় বাসিন্দাদের গলায় কিন্তু অন্য সুর। স্থানীয় বাসিন্দা দীপায়ন রায় বলেন,”অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলি ভোট প্রচারে এসে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দেয়। কিন্তু গণেশ ঘোষ এসবের বাইরে গিয়ে পরিবেশ সচেতনতা সহ অহিংসার কথা বলছেন। ভোট কাকে দেব সেটা অন্য কথা। তবে এই প্রচার কিন্তু খুব ভাল লাগল।” আবার পরিবেশ কর্মী শ্যামা প্রসাদ পাণ্ডে জানান, “এবারের গরমে নাজেহাল হয়েছে মানুষ। তাই এবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে পরিবেশ রক্ষা করা কতটা জরুরী। তবে ভোটের প্রচারে এই উদ্যোগ একেবারে অভিনব। আমি অন্তত এমন ভাবে প্রচারের কথা আগে শুনিনি। ওনাকে আমাদের তরফ থেকে সাধুবাদ দিচ্ছি।”
কী বলছেন গণেশ ঘোষ?
“রাহুল গান্ধী বার্তা দিয়েছেন “নফরত কে বাজর মে মহব্বত কা দোকান খোল রাহা হুঁ ” আমরা সেই বার্তাকে হাতিয়ার করে ভোটের ময়দানে নেমেছি। অহিংসা আমাদের মূল মন্ত্র। আমরা কোনও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না। তার বদলে আমরা এলাকার মানুষকে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর সম্ভন্দে সচেতন করে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তা দিচ্ছি।