Jalpaiguri: ‘হ্যাঁ, আমরা চুরি করি’, বালি বোঝাই ডাম্পার আটকাতেই অকপট স্বীকারোক্তি মালিকের

Nileswar Sanyal | Edited By: জয়দীপ দাস

Nov 24, 2023 | 11:44 PM

Jalpaiguri: আগে হাতে লিখে রাজস্ব নেওয়ার রসিদ দেওয়া হত। তখন রাজস্ব ছিল কম। ওই রসিদে ১ স্কোয়ার ফুট বালির জন্য কত টাকা ইজারাদার নিচ্ছে তা উল্লেখ থাকত। ফলে যিনি বালি কিনছেন তাঁকে রসিদ দিয়ে ওই টাকা আদায় করতেন লরি বা ডাম্পারের মালিকেরা।

Jalpaiguri: ‘হ্যাঁ, আমরা চুরি করি’, বালি বোঝাই ডাম্পার আটকাতেই অকপট স্বীকারোক্তি মালিকের
উঠেছে বিতর্কের ঝড়
Image Credit source: Facebook

Follow Us

জলপাইগুড়ি: হ্যাঁ, আমরা চুরি করি। একদিনের রাজস্ব দিই। সেই রসিদ ভাঙিয়ে কয়েকদিন বালি নিয়ে যাই। রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কারণ অন ক্যামেরায় সদর্পে জানালেন এক ডাম্পার মালিক। শুক্রবার জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকে বালি পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকেরা। এদিন আধিকারিকদের কাছে খবর আসে রাজগঞ্জের কিছু এলাকা দিয়ে রাজস্ব ছাড়াই অবাধে বালি পাচার করা হচ্ছে। খবর পেয়ে অভিযানে নামেন ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিকেরা। এদিন তাঁরা রাজগঞ্জে মোট আটটি ডাম্পার আটক করেন। তাদের কাছে বালি নিয়ে যাওয়ার রসিদ না থাকার অভিযোগে ডাম্পার পিছু ৪০ হাজার টাকারও বেশি জরিমানা করা হয় বলে খবর। আর এতেই বেজায় চটেছেন ডাম্পার মালিকেরা। তাঁরা গাড়ি বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন।

সূত্রের খবর, আগে হাতে লিখে রাজস্ব নেওয়ার রসিদ দেওয়া হত। তখন রাজস্ব ছিল কম। ওই রসিদে ১ স্কোয়ার ফুট বালির জন্য কত টাকা ইজারাদার নিচ্ছে তা উল্লেখ থাকত। ফলে যিনি বালি কিনছেন তাঁকে রসিদ দিয়ে ওই টাকা আদায় করতেন লরি বা ডাম্পারের মালিকেরা। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে রসিদ দেওয়া হয়। তাতে ১ স্কয়ার ফুট বালির জন্য ইজারাদার কত টাকা নিচ্ছে তা উল্লেখ থাকে না বলে খবর। ফলে যিনি বালি কিনছেন তিনি টাকা দিতে চান না। এছাড়া একই নদীর একেক ঘাটে একেক রকম রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে বলে কেউ কেউ অভিযোগ করছেন। কেউ ১ স্কয়ার ফুট নিচ্ছে ১২ টাকা, তো কেউ নিচ্ছে ১০ টাকা। অথচ তাঁরা অনেক কম দামে ইজারা নিয়েছেন বলে দাবি। ফলে এক ডাম্পার বালির জন্য ৩ হাজার টাকার বেশি টাকা রাজস্ব দিতে হচ্ছে। এদিকে যিনি বালি কিনছেন তিনি এত টাকা দিতে চাইছেন না। 

এই প্রসঙ্গে ডাম্পারের মালিক শরৎ কীর্তনীয়া তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়ে বলেন, এ কথা ঠিক তাঁরা অনেকসময় রাজস্ব ছাড়াই রাস্তায় বালি নিয়ে যাচ্ছেন। কারণ, আগে হাতে লিখে রসিদ দেওয়া হত৷ যিনি বালি কিনছেন তাঁকে রসিদ দিয়ে ওই টাকা আমরা আদায় করতাম। কিন্তু বর্তমানে অনলাইনে রসিদ দেওয়া হয়। তাতে ইজারাদার কত টাকা নিচ্ছে তা উল্লেখ  থাকে না। ফলে যিনি বালি কিনছেন তিনি টাকা দিতে চান না। এক ডাম্পার বালির জন্য আমাদের ৩০০০ এর বেশি টাকা রাজস্ব দিতে হয়। অথচ নদী পার ৭০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে সেই বালি আমরা ৭০০০ টাকা দরে বিক্রি করি। ফলে লেবার চার্জ, ডিজেল,গাড়ির কিস্তি এইসব দিয়ে আমাদের হাতে আর কিছু থাকে না। তাই আমরা ১ বার রাজস্ব দিয়ে বারবার গাড়ি চালাই। আর এইভাবে বালি আনলে ডিপার্টমেন্ট ধরে। ফাইন করে। আমরা খুব সমস্যায় আছি। এইসব না মিটলে গাড়ি চালানো বন্ধ করে দেব। 

ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের আধিকারিক সুব্রত দাস জানান, ইজারাদারদের রেট আমরা ঠিক করি না। রেট দফতর ঠিক করে। তাই এ ব্যাপারে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে আজ আমরা খবর পাই রাজগঞ্জ ব্লকের কিছু এলাকায় অবৈধভাবে বালি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বালি নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া অবৈধ ভাবে একশ্রেণির পাচার চক্র বালি নিয়ে যাচ্ছে। খবর পেয়ে আমরা অভিযান চালাই। আটিটি ডাম্পার আটক করে স্পট ফাইন করা হয়। এইধরনের অভিযান লাগাতার চালানো হবে।

Next Article