ঝাড়গ্রাম: কুড়মি আন্দোলনের (Kurmi Protest) নেতা তথা শিক্ষক রাজেশ মাহাতোকে (Rajesh Mahato) বিকেলেই আটক করেছে পুলিশ। আর এরই মধ্যে প্রকাশ্যে এল রাজেশ মাহাতোর বদলির নোটিস। শনিবার বিকেলে রাজেশ আটক হওয়ার পরই জানা যায়, খড়্গপুর থেকে কোচবিহারে বদলি করা হয়েছে। একেবারে উত্তরবঙ্গে বদলি। এতদিন খড়্গপুরের বনপুর হাইস্কুলের ইংরেজির শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। এবার তাঁকে কোচবিহারের সিতাইয়ের চামতা আদর্শ হাইস্কুলে। তাঁর বদলির এই চিঠিটি অবশ্য গতকালই অর্থাৎ, ২৬ মে ইস্যু করা হয়েছে। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শিক্ষা ক্ষেত্রের স্বার্থে প্রশাসনিক গ্রাউন্ডে এই বদলি করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে শালবনির দিকে যাওয়ার সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও বীরবাহা হাঁসদার কনভয়ের উপর হামলা চালিয়েছিল একাংশের মানুষ। রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহার গাড়ির সামনের উইন্ড শিল্ডও ভাঙচুর করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর মন্ত্রীর মুখেই শোনা গিয়েছিল রাজেশ মাহাতোর কথা। গাড়ি ভাঙচুরের প্রসঙ্গে কথা বলার সময়ে বীরবাহা বলেন, ‘রাজেশ মাহাতো ওখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁর ইন্ধনেই তো হয়েছে। রাজেশ মাহাতোকে আমি নিজে দেখেছি। রাজেশ মাহাতোর সঙ্গে কথাও বলেছি আমি। তাঁকে জিজ্ঞেস করেছি, এটা কী হল!’ অর্থাৎ, গতকাল রাতে কনভয়ে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি রাজেশ মাহাতোর ইন্ধনের অভিযোগ তুলেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা। আর গতকালই একটি চিঠি ইস্যু হয় তাঁর বদলি সংক্রান্ত বিষয়ে।
এই বদলির কথা প্রকাশ্যে আসার পর কড়া ভাষায় নিন্দা জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। টুইটারে ক্ষোভে উগরে দিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘এই প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজ্য সরকার প্রতিহিংসামূলকভাবে রাজেশ মাহাতোকে কোচবিহারে বদলি করেছে।’ শুভেন্দুর আরও বক্তব্য, ‘কোনও নিয়মনীতি না মেনেই এই স্বৈরাচারী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি রাজ্য সরকারের একটি দমনমূলক কাজ ছাড়া আর কিছুই নয়।’
A well known face of the Jungle Mahal; Shri Rajesh Mahata; Assistant Teacher of Banapur High School; Kharagpur has been vengefully & arbitrarily transferred to Cooch Behar by this vindictive State Govt.
This autocratic decision has been taken without adhering to any norms.
I… pic.twitter.com/M3fdA0t1hZ— Suvendu Adhikari • শুভেন্দু অধিকারী (@SuvenduWB) May 27, 2023
যদিও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উভয়েই ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, গতকালের এই ঘটনার সঙ্গে কুড়মি আন্দোলনকারীরা জড়িত রয়েছে বলে তাঁরা মনে করেন না। তাঁদের সন্দেহ, বিজেপির মদতে গতকালের এই ঘটনা ঘটেছে। এদিকে গতরাতের ঘটনার পর একাধিক কুড়মি নেতাকে ইতিমধ্যেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই গ্রেফতারির বিষয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজও। সমাজের রাজ্য সভাপতি যুধিষ্ঠির মাহাতোর বক্তব্য, এই ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই। এমন কাজ তাঁরা করতেই পারেন না। বরং গোটা বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের ভালভাবে তদন্ত করা প্রয়োজন বলেই মত তাঁদের।