লালগড়: আদালতের নির্দেশে অবশেষে রবিবার বিকালে লালগড় থানার নেতাই গ্রামে শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি যাওয়ার কিছুক্ষণ আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে নেতাই গ্রামে শহিদ স্মৃতি তর্পণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। শহিদ বেদিতেও শ্রদ্ধা জানায় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা গঙ্গাজল দিয়ে শহিদ বেদি ধুয়ে, রুমাল দিয়ে পরিষ্কার করার পর সেখানে মালা দিয়ে, ধূপ জ্বালিয়ে নেতাই গ্রামের শহিদদের শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ‘জঙ্গলমহলের কুটুম’ হিসেবে এসেছেন বলেও জানান শুভেন্দু অধিকারী।
২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাই গ্রামের নিহত নয়জনের মধ্যে ৭ জনের পরিবারের সদস্যদের হাতে এবং আহত ২৮ জনের মধ্যে ২৫ জনের হাতে এদিন আর্থিক সাহায্য ও বস্ত্র তুলে দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এরপর সেই হামলায় আহত কীর্তন রায়ের বাড়িতে রুটি ও সবজি খান তিনি।
এদিন আদালতের নির্দেশ মেনে নেতাই গ্রামের কর্মসূচি শেষ করে লালগড় বাজারের হাটতলা থেকে এসআই চক পর্যন্ত মোমবাতি মিছিলও করেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপর লালগড়ে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “তৃণমূলের সভায় শহিদদের কোনও ছবি ছিল না। নেতাই গ্রামে ২০২১ সালের ৭ জানুয়ারি সিপিএমের হার্মাদ বাহিনী গুলি চালিয়ে নয়জন গ্রামবাসীকে গুলি করে খুন করেছিল, ২৮ জন আহত হয়েছিলেন। সেদিন থেকে নিহতদের পরিবারের সদস্যদের পাশে এবং আহতদের পাশে আমি আমার সীমিত ক্ষমতা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। ২০২২ সালে আমাকে নেতাই গ্রামে ৪ হাজার পুলিশ ঢুকতে দেয়নি, তাই ২০২৩ সালে আমি বিতর্কে যাইনি। তবে ৩০ জানুয়ারি আমি নেতাই গ্রামে এসে শহিদদের শ্রদ্ধা জানিয়েছি। এবার আদালতের নির্দেশে আমাকে নেতাই গ্রামে আসতে হয়েছে। নেতাই গ্রামের মানুষ যে আমার পাশে রয়েছে তা আজ ফের প্রমাণিত হল।” একইসঙ্গে শুভেন্দু বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষ আমাকে জঙ্গলমহলের কুটুম বলে সম্মান দিয়েছে। তাই জঙ্গলমহলের কুটুম হিসেবে আমি এসেছি।”
এদিন লালগড়ে দাঁড়িয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও সুর চড়ান বিরোধী দলনেতা। ডায়মন্ড হারবারের সভা থেকে এদিন আসন্ন নির্বাচন নিয়ে বিজেপিকে হারানোর চ্যালেঞ্জ ছুড়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার জবাব দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় হারবেন। বিজেপি প্রার্থী জয়লাভ করবেন। আইএসএফ প্রার্থী দ্বিতীয় হবেন, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃতীয় হবেন।”