আসানসোল: ২১ জন অধ্যাপকের একসঙ্গে ইস্তফা দেওয়ার পর ধরনা-অবস্থান বা বিক্ষোভ এতদিন সীমাবদ্ধ ছিল কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের (Kazi Najrul University) অন্দরেই। কোনও সুরাহা না হওয়ায় অবশেষে সোমবার রাস্তায় নামলেন অধ্যাপকেরা। আসানসোলের (Asansol) চেলিডাঙা থেকে বিএনআর মোড় পর্যন্ত মিছিল করে রেজিস্ট্রারকে পুনর্বহাল এবং উপাচার্জকে বহিষ্কারের দাবি তুললেন কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা।
এদিন বিকালে আসানসোলের চেলিডাঙা থেকে বিএনআর মোড় পর্যন্ত মিছিল করেন কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকেরা। বিভিন্ন পদে ইস্তফা দেওয়া ২২ জন বিক্ষুব্ধ অধ্যাপক ছাড়া অন্যান্যরাও এই মিছিলে সামিল হন। মিছিল শেষে বিএনআর মোড়ে ধরনা অবস্থানে বসেন তাঁরা। ধরনামঞ্চ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতিরঅভিযোগে সরব হন। বিক্ষুব্ধ অধ্যাপকরা দাবি তোলেন, অর্থনৈতিকভাবে বরখাস্ত করা রেজিস্ট্রারকে পুনর্বহাল করতে হবে। তদন্ত করতে হবে উপাচার্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে এবং উপাচার্জকে বহিষ্কার করতে হবে। এদিনের মিছিল ও অবস্থান-বিক্ষোভে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের পাশাপাশি ওই বিশ্ববিদ্যালয় অধীনস্থ অন্যান্য কলেজের অধ্যাপকেরাও যোগ দেন।
অন্যদিকে, উপাচার্য ড. সাধন চক্রবর্তী পাল্টা বিশ্ববিদ্যায়ের অধ্যাপক ও কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ এনেছেন। তাঁর অভিযোগ, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ও ডেভেলপমেন্ট অফিসার কর্মরত অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু কর্মী ও কিছু বহিরাগতদের দ্বারা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। শারীরিক এবং মানসিক অত্যাচারের ফলে ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তাঁরা। এমনকি উপাচার্যের অফিস ১৪ তারিখ থেকে এদিন পর্যন্ত বন্ধ করে রাখা হয়েছে। ফলে
অফিসে ঢুকতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন ড. সাধন চক্রবর্তী।
প্রসঙ্গত, অধ্যাপক বনাম উপাচার্যের সংঘাতে প্রায় অচলাবস্থার মতো অবস্থা হয়েছে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ইতিমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২২ জন অধ্যাপক বাড়তি দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। যদিও আন্দোলন চললেও পঠনপাঠন, গবেষণার কাজ ঠিকঠাক চলছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু, রেজিস্ট্রার বরখাস্ত, ডেপুটি রেজিস্ট্রার আসছেন না, উপাচার্জের দেখা নেই, উপাচার্জ ঘনিষ্ঠ ডেভলপমেন্ট অফিসার পদত্যাগ করে চলে গিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের গন্ডি ছাড়িয়ে রাস্তায় নেমে আন্দোলনে নেমেছেন অধ্যাপকরা। সবমিলিয়ে, চরম অব্যবস্থা দেখা দিয়েছে কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে উচ্চ শিক্ষা দফতরের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মচারী ও আসানসোল দুর্গাপুরের বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপকরাও।