মালদহ: কারও জ্বর, কারও অসহ্য শরীরে ব্যথা। গোটা গ্রামজুড়ে ছবি প্রায় একই। মেডিক্যাল টিম প্রথমে ডেঙ্গি ভেবে ভুল করলেও, পরে সামনে এল আসল কারণ। গ্রাম জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে চিকুনগুনিয়া। গ্রামের সব পরিবারেই এক বা একাধিক জন আক্রান্ত জ্বরে। ইতিমধ্যেই ২৪ জনের চিকুনগুনিয়া ধরা পড়েছে। অনেকেই খুব গুরুতর অসুস্থ। আশঙ্কাজনক। স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে আশেপাশের গ্রাম তথা গোটা জেলা জুড়েই।
মালদহের হবিবপুর ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের কলাইবাড়ি গ্রামে চিকুনগুনিয়ার থাবা। ইতিমধ্যে গ্রামের ২৪ জনের শরীরে এই রোগ দেখা দিয়েছে বলে খবর স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে। যা ঘিরে জেলার স্বাস্থ্য কর্তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। আতঙ্কে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা।
স্বাস্থ্য দফতর থেকে গ্রামবাসীদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রায় তিন মাস ধরে অজানা জ্বর নিয়ে আতঙ্ক বাড়ছিল মালদার কলাইবাড়ি গ্রামে। জ্বরের সঙ্গে অসহ্য হাতে পায়ে ব্যথা অনুভব করছিলেন তারা। প্রথমদিকে এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের রিপোর্টের পর জ্বরে আক্রান্ত ৫০জনের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। তা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়।
সম্প্রতি, এলাকার বাসিন্দারা চিকনগুনিয়ায় আক্রান্ত এমনই রিপোর্ট আসার পর নড়েচড়ে বসেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। গ্রামের বহু মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় স্বাস্থ্য দফতর থেকে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হযেছে। গ্রাম জুড়ে চিকনগুনিয়া রোগ ছড়িয়েছে। রোগ নির্ণয় হওয়ায় ধীরে ধীরে প্রকোপ কমে যাবে বলে জানান স্বাস্থ দফতরের কর্তারা। যদিও এই রোগের নির্দিষ্ট কোনও ভ্যাকসিন বা ওষুধ নেই। তবে জ্বর ও ব্যথার ওষুধ খেলেই সুস্থ হয়ে উঠবেন রোগীরা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে মালদায় চিকুনগুনিয়া দেখা যায়নি। সাধারণত এই রোগ মশা থেকে ছড়ায়। ডেঙ্গির এডিস মশা থেকেই এই রোগ ছড়ায় বলে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।তবে এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মৃত্যু হয় না। সমস্ত বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগ দেখা যায়। রোগের উপসর্গ জ্বর ও হাত-পায়ে অসহ্য যন্ত্রণা। এই রোগের লক্ষণ পাওয়ার পরেই ব্লক প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে কলাইবাড়ি গ্রামে শুরু হয়েছে বিভিন্ন রকমের সচেতনতা শিবির। যেহেতু মশা থেকে এই রোগ ছড়ায় তাই মশা নিধনের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করা হচ্ছে।
মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত ভাদুড়ি বলেন, “হবিবপুরে জ্বরের পর অসহ্য শরীরে ব্যথা হচ্ছিল। প্রথমে মেডিক্যাল দল ভেবেছিল বয়সের কারণে হয়ত হয়েছে। যাঁদের জ্বর আছে তাদের ডেঙ্গির স্যাম্পেল যায়। আমার শুনে মনে হয়েছিল চিকনগুনিয়া। পরে পরীক্ষার পর জানা যায় চিকনগুনিয়া।”