Kanyashree: ‘আমার কাছে দাবি করেছিলেন, আমি পারিনি…’ কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে চায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, হতে হল ‘বিবাহিত’

Rupashree Project: রতুয়া-১ ব্লকের চাঁদমনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোমপাল গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তাঁর মেয়ে সুলতানা পারভিন স্থানীয় বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।  দেড় বছর আগে সুলতানার বয়স ১৮ বছর হয়ে যায়। গ্রামাঞ্চলে যা স্বাভাবিক হিসাবেই দেখা হয়।

Kanyashree: 'আমার কাছে দাবি করেছিলেন, আমি পারিনি...' কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পেতে চায় একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, হতে হল 'বিবাহিত'
রূপশ্রী প্রকল্পে কাটমানি চাওয়ার অভিযোগ Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 11, 2024 | 5:41 PM

মালদহ: কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধে পেতে তদন্তকারী সরকারি কর্মীকে দাবি মতো কাটমানি না দেওয়ায় বিপাকে পড়েছে একাদশের এক ছাত্রী৷ সরকারি নথিতে তাকে বিবাহিত উল্লেখ করে তার কন্যাশ্রীর ফর্ম বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ।  বঞ্চিত করা হচ্ছে সরকারি প্রকল্প থেকে। প্রায় দেড় বছর ধরে পঞ্চায়েত ও ব্লক দফতরের ঘোরাঘুরি করেও কোনও সুরাহা হয়নি ওই ছাত্রীর। শেষ পর্যন্ত এনিয়ে বিডিওর কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে সে। অভিযোগের প্রতিলিপি রতুয়া থানা, জেলা শাসক, মহকুমা শাসকের কাছেও পাঠানো হয়েছে। অভিযোগ পেয়েই তদন্তে নেমে পড়েছেন বিডিও।

রতুয়া-১ ব্লকের চাঁদমনি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোমপাল গ্রামের বাসিন্দা রবিউল ইসলাম। তাঁর মেয়ে সুলতানা পারভিন স্থানীয় বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার একাদশ শ্রেণিতে পড়ে।  দেড় বছর আগে সুলতানার বয়স ১৮ বছর হয়ে যায়। গ্রামাঞ্চলে যা স্বাভাবিক হিসাবেই দেখা হয়।  নিয়মমতো তিনি মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছে কন্যাশ্রী প্রকল্পের কে-২ ফর্ম পূরণ করেন।  মাদ্রাসার তরফে সেই ফর্ম ভেরিফিকেশন করে পাঠিয়ে দেওয়া হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত দফতরে। সুলতানার ফর্মের সঙ্গে তাঁর বাস্তব খতিয়ে দেখার কথা ওই পঞ্চায়েতের সহায়ক শান্তনু দাসের। তাঁর রিপোর্টের ভিত্তিতেই ব্লক থেকে কন্যাশ্রীর নাম পাঠানো হবে জেলায়।

অভিযোগ, সুলতানার ফর্ম অনুমোদন করে ব্লকে পাঠাতে ঘুষ দাবি করেছিলেন শান্তনু। সেই দাবি না মানায় তিনি তাঁর রিপোর্টে সুলতানাকে বিবাহিত বলে উল্লেখ করেন। এর জেরে সুলতানার ফর্ম বাতিল হয়ে যায়। সুলতানা বলেন, “আমার সঙ্গে একাধিক বান্ধবীও কে-২ ফর্ম জমা করেছিল। ওদের সবার ভেরিফিকেশন হয়ে গেলেও আমার হয়নি। আমি শান্তনুবাবুর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি আমার কাছে টাকা দাবি করেন। আমি টাকা না দেওয়ায় তিনি আমার ফর্ম ব্লকে পাঠাননি। দেড় বছর ধরে পঞ্চায়েত আর ব্লক দফতর ঘুরে ঘুরে শেষ পর্যন্ত আমার মামা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, পঞ্চায়েত থেকে আমাকে বিবাহিত বলে রিপোর্ট পাঠানোয় আমার ফর্ম বাতিল হয়ে গিয়েছে। এনিয়ে আমি বিডিওকে অভিযোগ দায়ের করেছি।”

বাটনা জেএমও সিনিয়র মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক আনওয়ারুল হক জানান, “মেয়েটির কাছে সব শুনে আমি নিজে পঞ্চায়েত সহায়ক শান্তনুর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে। কেন ওকে বিবাহিত দেখানো হল জানতে চাই। কোনও সদুত্তর না পেয়ে বিষয়টি আমি ব্লক অফিসের নোডাল অফিসার প্রসেনজিৎ সরকারকেও জানাই। কিন্তু এখনও কেন মেয়েটির নাম কন্যাশ্রী প্রকল্পে তোলা হচ্ছে না জানি না। মেয়েটি অবিবাহিত হলেও এবিষয়ে রিপোর্ট দেওয়ার এক্তিয়ার আমাদের নেই।”

এনিয়ে অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সহায়ক মন্তব্য করতে রাজি না হলেও বিডিও রাকেশ টোপ্পো বলেন, “অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযোগ সঠিক প্রমাণিত হলে ওই সরকারি কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ করা হবে।”

এখন দেখার বিষয় অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্লক ও জেলা প্রশাসন ওই পঞ্চায়েত কর্মীর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ওই ছাত্রী কি প্রকল্পের প্রাপ্য টাকা পাবে? নাকি প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে! এখন এই প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে।