মালদহ: হঠাৎ বীভৎস শব্দ। কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের মাথা থেকে গলগল করে বেরচ্ছে রক্ত। হাসপাতালে নিয়ে গেলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি। মালদহের সেই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশের হাতে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। এক বন্ধুর হাতের পিস্তল থেকে ছিটকে যাওয়া গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে সামিউল ইসলাম নামে ওই ছাত্রের। ইতিমধ্যেই অভিযোগের ভিত্তিতে বন্ধু সাফি আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানতে পেরেছে, ঘটনার দিন সেভেন এমএম পিস্তল নিয়ে সামিউল (মৃত ছাত্র) ও তাঁর বন্ধু সাফি রিল তৈরি করছিল। সেই সময়ই এই ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ঘটনার সময় বাড়িতে কেউ ছিল না। সামিউল ও তার বন্ধু সাফি আলীই ছিল। তারা বাড়ির ছাদে রিল বানাতে ওঠে। হাতে ছিল সেভেন এমএম পিস্তল।
হঠাৎই শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। এরপরই প্রতিবেশীরা ওই বাড়িতে ঢুকে সামিউলের ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত দেহ দেখতে পান। দেহের পাশে পড়েছিল ওই আগ্নেয়াস্ত্র। তড়িঘড়ি সামিউলকে চিকিৎসার জন্য স্থানীয় সিলামপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক সামিউলকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
সামিউলের মাথায় ছিল বুলেটের চিহ্ন। আত্মহত্যা নাকি, খুন তা নিয়ে ধন্দে পড়ে পুলিশ। এরপর শুরু হয় তদন্ত। কালিয়াচক থানার আই সি সুমন রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে শুরু হয় তদন্ত। শুরুতেই সামিউলের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়। সেটা খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে ‘রিল’ বানাতে পারদর্শী ছিল সে। এরপরই পুলিশের কাছে স্পষ্ট হয়, সাফি আলী তার বন্ধু সামিউল ইসলামের মাথায় আগ্নেয়াস্ত্র ধরে, সেই সময় গুলি বেরিয়ে যায়। গুলির আঘাতে সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যু হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সামিউল ইসলামের।
মৃত ছাত্রের বাবা রাজীকুল ইসলাম কালিয়াচক থানায় এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। তদন্তকারী পুলিশ কর্তা জানান ঘটনাস্থল থেকে একটি লোহার তৈরি ইম্প্রোভাইজড সার্ভিসেবল কান্ট্রি মেড ৭ এম এম স্বয়ংক্রিয় ম্যাগাজিন পাওয়া গিয়েছে। গুলিও ভরা ছিল তাতে। সব মিলিয়ে অস্ত্রটির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪ ইঞ্চি। এছাড়াও পাওয়া গিয়েছে, রক্তের দাগ সহ একটি কম্বল, একটি মোবাইল হ্যান্ডসেট। দুই কিশোরের হাতে কীভাবে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এল, সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ কর্তারা।