মুর্শিদাবাদ: হরিহরপাড়া থেকে আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখ গ্রেফতার হওয়ার পর নানা জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, মাদ্রাসাগুলিকে কি জঙ্গি কার্যকলাপ ছড়ানোর কাজে ব্যবহার করতেন আব্বাসরা? আর এইসব প্রশ্নের মধ্যে রাজ্যে বিভিন্ন মাদ্রাসার পরিস্থিতি নিয়ে নানা তথ্য সামনে আসছে। রাজ্যজুড়ে অনথিভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের। সূত্রের খবর, শুধু মুর্শিদাবাদ জেলাতেই অনথিভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোর বেশি।
বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লা বাংলা টিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন আব্বাস ও মিনারুল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, আব্বাস অনথিভুক্ত বিভিন্ন মাদ্রাসার মধ্য দিয়ে জঙ্গি কার্যকলাপের কাজ করতেন। আব্বাস আলির নিজস্ব যে মাদ্রাসা রয়েছে, সেখানে স্কুলের কোনও বোর্ড কিংবা মাদ্রাসার কোনও নেমপ্লেট নেই। ফাঁকা মাঠের মধ্যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই মাদ্রাসা চালাতেন আব্বাস।
গোয়েন্দারা বলছেন, এইসব মাদ্রাসাগুলির আড়ালে এই সমস্ত কার্যকলাপ চালাতে সুবিধে। কারণ বিভিন্ন সময় শিক্ষকের নাম করে বাইরে থেকে কেউ আসলে কেউ জানতে চায় না। আবাসিক মাদ্রাসাগুলিতে থাকার বন্দোবস্ত থাকে। সেইসব বিষয়কেই কাজে লাগায় জঙ্গিরা।
সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদে জেলা। সেই জেলায় রয়েছে প্রচুর অনথিভুক্ত মাদ্রাসা। যেগুলি গ্রামবাসী বা বিভিন্ন ট্রাস্টের মাধ্যমে চালানো হয়। জেলায় অনথিভুক্ত মাদ্রাসার সংখ্যা সাড়ে পাঁচশোর বেশি। গোয়েন্দারা বলছেন, অনথিভুক্ত মাদ্রাসাগুলিতে টাকার অভাব থাকে। সেই সব সুযোগকে কাজে লাগায় জঙ্গিরা। সেই জন্য সফট টার্গেটে থাকে এইসব মাদ্রাসা। জেলায় সেসব মাদ্রাসায় আর্থিক অনুদান দেওয়ার নাম করে জঙ্গিরা স্লিপার সেল তৈরি করে।
ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলছেন, ২০১১ সালে এ রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার অনুমোদনহীন মাদ্রাসা ছিল। সেই সংখ্যা এখন আরও বেড়েছে। সেই মাদ্রাসাগুলি স্থানীয় বিভিন্ন কমিটি পরিচালনা করে। তিনি বলেন, কাউকে নিয়োগ করার আগে মাদ্রাসা কমিটিগুলির খতিয়ে দেখা দরকার। তাঁর নিজেরও একটি মাদ্রাসা আছে জানিয়ে ভরতপুরের বিধায়ক বলেন, মাদ্রাসায় জঙ্গি হয় না। চালে যেমন কাঁকর থাকে, তেমনই কেউ হয়তো অসৎ উদ্দেশ্য ঢুকে পড়তে পারে। তাদের জন্য আইন আছে।