Ranaghat: ‘আর যদি কয়েক মিনিট আগে আসতেন….’, বিজেপির র‌্যালিতে আটকে অ্যাম্বুলেন্স, মৃত্যু ৪ মাসের গর্ভবতীর

Pregnant Woman Death:

Ranaghat: 'আর যদি কয়েক মিনিট আগে আসতেন....', বিজেপির র‌্যালিতে আটকে অ্যাম্বুলেন্স, মৃত্যু ৪ মাসের গর্ভবতীর
মৃত প্রসূতিImage Credit source: Tv9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 07, 2024 | 9:27 PM

রানাঘাট: আরজি কর-কাণ্ডে জাস্টিস চেয়ে পথে নেমেছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক দল। বাদ যায়নি বিজেপিও। শুক্রবার তিলোত্তমার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছিল পদ্ম শিবির। অভিযোগ সেই অবরোধে আটকে গিয়েছিল প্রসূতি সহ একটি অ্যাম্বুলেন্স। দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকার পর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে রাস্তাতেই মৃত্যু চার মাসের গর্ভবতীর। যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর রাজনৈতিক তরজা।শুক্রবার মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ফুলিয়া-রানাঘাটের মাঝে, ১২ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতার নাম দুর্গা শীল (২৩)।

মৃতের পরিবার সূত্রে খবর, কয়েক বছর আগে ফুলিয়ার প্রফুল্লনগরের বাসিন্দা হীরা শীলের সঙ্গে বিয়ে হয় দুর্গার। তবে গৃহবধূ মৃগী আক্রান্ত ছিলেন। অপরদিকে ফুলিয়াতেই হীরার একটি সেলুনের দোকান রয়েছে। শুক্রবার ভাত রান্নার জন্য তোড়জোড় করছিলেন অন্তঃসত্বা দুর্গা। সেই সময় আচমকাই মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। বাড়ি থেকে খবর যায় দুর্গার স্বামী হীরার কাছে। চিকিৎসার জন্য টোটো করে স্ত্রীকে নিয়ে যান ফুলিয়া হাসপাতালে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে রোগীকে স্থানান্তরিত করা হয় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে রওনা দেন হীরা ও পরিবারের লোকজন।

এ দিকে, আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে তখন ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গায় চলছিল বিজেপির চাক্কা জ্যাম কর্মসূচি। মৃত প্রসূতির পরিবারের দাবি, হবিবপুরের কাছে বিজেপির মিছিলে আটকে পড়ে অ্যাম্বুলেন্সটি। সামনে তখন গাড়ির লম্বা লাইন। মৃতার স্বামীর দাবি, তিনি কার্যত চালকদের হাতে পায়ে ধরতে বাকি রাখেন যাতে অ্যাম্বুলেন্সটি এগিয়ে নিয়ে যেতে দেন তাঁরা। কিন্তু লাভ হয়নি। প্রায় পনেরো মিনিট অ্যাম্বুলেন্সটি আটকে ছিল।

বিষয়টি পুলিশের নজরে এলে পিছনের কিছু গাড়ি সরিয়ে অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরিয়ে বার করে দেওয়া হয় অ্যাম্বুলেন্সটিকে। কোনওক্রমে হাসপাতালে পৌঁছন দুর্গা। তবে ততক্ষণে সব শেষ। এমারজেন্সিতে নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় তাঁর। শোকাহত হীরা বলেন, ” ডাক্তারবাবু বললেন,কয়েক মিনিট আগে এলেও হয়তো স্ত্রীকে বাঁচানো যেত। কিন্তু অবরোধের জন্য পারলাম না। আমার চরম ক্ষতি হয়ে গেল।’ তবে গর্ভবতীর মৃত্যুর নিন্দা করেন হাসপাতালে উপস্থিত অন্যান্য রোগীর পরিজনরাও। তাঁদের প্রশ্ন, প্রতিবাদের নামে হাজার হাজার মানুষকে এভাবে বিপদে ফেলার মানে কী? যদিও গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া পরিবারে। যদিও এই বিষয়ে শুরু রাজনৈতিক তরজা, এই মৃত্যুর ঘটনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে শান্তিপুর বিধানসভার বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী জানান,”যে কোনও রাজনৈতিক দল আন্দোলন করতেই পারে। তবে একটা অ্যাম্বুলেন্সকেও ছাড়লো না তারা? আসলে সংগঠিত ভাবে কোনো আন্দোলন না নাহলে এই ঘটানা ঘটবেই, তবে তৃণমূল দল মৃতার পরিবারের সাথে আছে।” অপরদিকে, পুলিশ প্রশাসনের উপর দোষারোপ চাপিয়ে রানাঘাট দক্ষিণ সাংগঠনিক বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর জানান, “এই ঘটনা আমার জানা নেই। তবে এই ঘটনা যদি ঘটে থাকে তাহলে তার দায় পুলিশ প্রশাসনের। আন্দোলনে সকল কর্মীরা অ্যাম্বুলেন্স কে ছেড়ে দিয়েছে। তবে দূরে কোনও অ্যাম্বুলেন্স দাঁড়িয়ে আছে সেটা দলীয় কর্মীদের দেখা সম্ভব নয়। তাই পুলিশ প্রশাসন এর জন্য দায়ী। কোনও ভাবেই বিজেপি কর্মী সমর্থকরা নয়। তবে এই ঘটনা অনভিপ্রেত।”

আরও খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Tv9 বাংলা অ্যাপ (Android/ iOs)