কলকাতা: হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নিজেদের হাতে পেতেই তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তাকারী সংস্থা (CBI)। হানা দিয়েছে তেহট্টের তৃণমূল বিধায়ক তাপস সাহার (TMC MLA Tapas Saha) বাড়িতে। দীর্ঘক্ষণ তাঁর বাড়ির ভিতরে ছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইয়ের অফিসাররা। বাড়িতে গিয়েই প্রথমেই বিধায়কের ফোন সিজ করে নেন তদন্তকারী অফিসাররা। এরপর তাপসকে সঙ্গে নিয়েই তাঁর বাড়ি থেকে বেরোন সিবিআই তদন্তকারী দল। গাড়িতে চাপিয়ে বিধায়ক তাপস সাহাকে নিয়ে যাওয়া হল বেতাই ডক্টর বি আর আমবেদকর কলেজে। জানা যাচ্ছে, এই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি হলেন তাপস সাহা।
এদিন নিজাম প্যালেস থেকে সিবিআইয়ের অফিসারদের একটি দল তাপস সাহার বাড়িতে অভিযান চালানোর পাশাপাশি আরও তিনটি জায়গায় অভিযান চালাচ্ছে। সিবিআই অফিসারদের কিছু সদস্য রয়েছেন গাদিয়ারায় শিবপুরে মান্নাপাড়ায় সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে। শ্যামপুরের কাঠানলিতে তাপস সাহার পূর্ব পরিচিত প্রবীর কয়ালের বাড়িতেও গিয়েছে সিবিআইয়ের একটি দল। এর পাশাপাশি ওই এলাকাতেই শ্যামল কয়ালের বাড়িতেও রয়েছে সিবিআই টিম। তিনটি জায়গাতেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তল্লাশি অভিযান চালানো হয়।
এদিকে প্রায় দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কলেজে তল্লাশি চালান সিবিআই অফিসাররা। কলেজের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চলে তল্লাশি অভিযান। কলেজের ছাত্র সংসদ অফিসেও যান সিবিআই আধিকারিকরা। প্রায় তিন ঘণ্টা পরে বাড়ি ফিরে আসেন বিধায়ক। বর্তমানে তিনি বাড়িতেই রয়েছেন। বাড়ি ফিরে তাপস রায় সংবাদ মাধ্যমের উদ্দেশে জানান, ‘আধিকারিকরা কিছু পায়নি। আমাকে ভাই একটু খেতে দাও, আমি পেশেন্ট, ওষুধ খাই, পরে কথা বলব।’ রাত ১১ টা ৪০ মিনিট নাগাদ বিধায়কের বাড়িতে প্রিন্টার নিয়ে যান কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা যখন তেহট্টের কড়ুইগাছিতে পৌঁছান, তখন বাড়িতেই ছিলেন বিধায়ক। প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান নিয়ে তাপস সাহার বাড়িতে ঢোকেন সিবিআই গোয়েন্দারা। সিবিআইয়ের ‘অপারেশন তেহট্ট’ শুরু হয়ে দুপুর প্রায় সাড়ে তিনটে নাগাদ। করুইগাছি গ্রামে বিধায়কের বাড়ি এবং বিধায়ক কার্যালয়ে তল্লাশি শুরু করেন সিবিআই আধিকারিকরা। গোটা বাড়ি এবং অফিস চত্বর ঘিরে ফেলা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দিয়ে।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল বিধায়কের বাড়িতে ঢুকতেই বন্ধ করে দেওয়া হল বাড়ির মূল গেট। এরপর প্রথমে বিধায়কের কার্যালয়ে তাপস সাহাকে বসিয়ে বিভিন্ন নথি দেখা হয়। সেখানে আলমারি খুলে বিভিন্ন নথিপত্র ঘেটে দেখা হয়। তারপর বিধায়ককে নিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢোকেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। বাড়ির ভিতরে দীর্ঘক্ষণ থাকার পর সন্ধেয় বিধায়ককে নিয়ে গাড়িতে চাপিয়ে বেতাই ডক্টর বি আর আমবেদকর কলেজে পৌঁছে যান গোয়েন্দারা।