রানাঘাট: বর্ষাকাল এলেই বাড়-বাড়ন্ত ডেঙ্গির। এই বছরও তার অন্যথা হয়নি। যার জেরে চিন্তার ভাঁজ স্বাস্থ্য ভবনের কপালে। আর গ্রাম-বাংলার পরিস্থিতি মোটেই ভাল নয় সে কথা পরিষ্কার স্বাস্থ্যভবনের রিপোর্টে। এই তালিকায় শীর্ষে রয়েছে নদিয়ার বিভিন্ন জায়গা। তার মধ্যে রানাঘাট-১, রানাঘাট-২, হরিণঘাটা, কৃষ্ণনগর-১।
এ দিকে, রানাঘাট সহ পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে রোগী ভর্তির জায়গা পর্যন্ত নেই বলছেন রোগীর পরিজনরা। রোগীর পরিবারের দাবি, যে সমস্ত রোগীরা চিকিৎসা করাতে আসছেন তাঁদের বেশিরভাগই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। পরিস্থিতি এমনই যে একই বেডে দু থেকে তিনজন পর্যন্ত রোগীকে রাখা হয়েছে। হরিণঘাটা থেকে আগত এক রোগীর পরিজন বলেন, “বাইরে নোংরা। হাসপাতালের ভিতরও নোংরা। আমি বলেছিলাম হাসপাতাল পরিষ্কার করুন।”
আর বিষয়টি নজর এড়ায়নি বিজেপি-র। রানাঘাট পৌরসভার বিজেপি কাউন্সিলর কামনাশিস চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, তিনি প্রথমে থেকেই ডেঙ্গি প্রতিরোধের জন্য ব্যবস্থা নিয়ে একাধিকবার পৌরসভায় চিঠি লিখেছেন। কিন্তু পৌরসভা কোনও গুরুত্ব দেয়নি। আগে থেকে যদি ডেঙ্গি প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিত তাহলে এই অবস্থা দেখতে হত না।
অপরদিকে, রানাঘাটে ডেঙ্গির বাড়বাড়ন্তের কথা স্বীকার করে পৌরসভার পৌর প্রধান কৌশল দেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এটা ঠিক ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে এখানে। কিন্তু প্রথম থেকেই রোগ প্রতিরোধের সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে পৌরসভা। প্রত্যেকের বাড়িতে বাড়িতে সার্ভে করা হয়েছে। এছাড়াও ড্রেন থেকে শুরু করে জলাশয় জায়গা গুলিতে কীটনাশক তেল দেওয়া হয়েছে। কলকাতা থেকে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা এসে পর্যবেক্ষণ করেছেন।” তবে এই বিষয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
উল্লেখ্য, স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, গত জুলাইয়ে রাজ্যে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৬২৬। এবার জুলাই শেষের আগেই তা ২ হাজার অতিক্রম করে গিয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২ হাজার ৬০০ পার করে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। শুধু তাই নয়, গড়ে মোট আক্রান্তের ৬৫ শতাংশই গ্রামবাংলার।