SIR in Bengal: বাংলাদেশি ব্যক্তির ভারতীয় ‘বাবা’? মুখ খুলতে ‘ভয়’ পাচ্ছে বৃদ্ধের পরিবার
Hingalganj: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোন্তাজ গাজীর এক বৌমা কাপড়ে মুখ ঢেকে সংবাদমাধ্যমের সামনে বলেন, "আমার স্বামীরা আট ভাই। মোশারফ হোসেন গাজী আমাদের কেউ হয় না। তার বাড়ি বাংলাদেশে। এখানে এসে কীভাবে আমার শ্বশুরকে বাবা সাজিয়ে দিয়ে ভোটার কার্ড বানিয়েছে, তা আমরা জানি না।"

হিঙ্গলগঞ্জ: বাংলাদেশ থেকে এসেছেন। ভারতীয় বৃদ্ধকে বাবা হিসেবে দেখিয়ে আধার কার্ড, ভোটার কার্ড করেছেন। এমনই অভিযোগ। বাংলাদেশ থেকে আসা ওই ব্যক্তির নাকি রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে ‘ওঠাবসা’। তাই, ভয়ে বৃদ্ধের পরিবার সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলতে চাইলেন না। অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে অভিযুক্তের স্ত্রী সব অভিযোগ খারিজ করে দাবি করলেন, ওই বৃদ্ধই তাঁর স্বামীর বাবা। তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাননি বলে এমন মন্তব্য করছেন। ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার হিঙ্গলগঞ্জের।
হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার বরুণহাট রামেশ্বরপুর পঞ্চায়েতের ৪৫ নম্বর বুথের বাসিন্দা মোন্তাজ গাজী। অভিযোগ, তাঁকে বাবা হিসেবে দেখিয়ে ভারতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করেছেন বাংলাদেশি নাগরিক মোশারফ হোসেন গাজী। এখানে আসার পর সাজদা বিবি নামে এক মহিলাকে বিয়ে করে ঘর সংসার করছেন। পেশায় ব্যবসায়ী। পাশাপাশি এলাকার শাসকদলের নেতাদের সঙ্গে তার ওঠাবসা রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় রীতিমতো রাজনৈতিক দলের নেতৃত্ব দেন তিনি।
অভিযোগ, সংবাদমাধ্যম তাঁর বিষয়ে জানতে পারার পর মোন্তাজ গাজীর পরিবারকে শাসিয়ে এসেছেন মোশারফ। সংবাদমাধ্যমের সামনে যাতে কেউ মুখ না খোলেন, সেকথা জানিয়ে এসেছেন। সেই কারণে মোন্তাজ গাজীর পরিবারের কেউ সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে কোনও কিছু বলতে রাজি হননি। অনেক অনুরোধের পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোন্তাজ গাজীর এক বৌমা মুখে কাপড় ঢেকে বলেন, “আমার স্বামীরা আট ভাই। মোশারফ হোসেন গাজী আমাদের কেউ হয় না। তার বাড়ি বাংলাদেশে। এখানে এসে কীভাবে আমার শ্বশুরকে বাবা সাজিয়ে দিয়ে ভোটার কার্ড বানিয়েছে, তা আমরা জানি না।”
অন্যদিকে মোশারফ হোসেন গাজীর স্ত্রী সাজিদা বিবি দাবি করেন, “মোন্তাজ গাজী আমার স্বামীর বাবা-ই। বিয়ের পরে আমি গরিব ঘরের মেয়ে বলে শ্বশুর মেনে নেননি। তাই এমন বলছেন।” তবে তাঁর স্বামীর নাম ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় ছিল না বলে বলে স্বীকার করে নেন সাজিদা। এদিকে, ক্যামেরায় ধরা পড়ল মোশারফের ঝাঁ চকচকে বাড়ি। সেখানে মোন্তাজ গাজীর পরিবারের হাল যে ততটা ভাল নয়, তা স্পষ্ট।
ঘটনা ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। তৃণমূল ও বিজেপি পরস্পরকে তোপ দেগেছে। তৃণমূলের হাসনাবাদ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলাম বলেন, “এসআইআর তো নির্বাচন কমিশনের ব্যাপার। তাছাড়া বাংলাদেশ থেকে কেউ এলে, তা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দেখার কথা। এখানে আমাদের কোনও হাত নেই।” বিজেপির বসিরহাট সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুকল্যাণ বৈদ্য বলেন, “তৃণমূল নেতাদের মদতে ভোটার তালিকায় নাম তুলেছে। এরাই ভোটের সময় সন্ত্রাস চালায়। আর তৃণমূল এখন সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কথা বলছে। কিন্তু, কাঁটাতার দেওয়ার জন্য জমি দেয়নি। সব বাংলাদেশি ফেরত পাঠানো হবে।” এদিকে, স্থানীয় বিএলও জানিয়েছেন, নথি দেখে মোশারফের এনুমারেশন ফর্ম জমা নিয়েছেন তিনি।
