উত্তর ২৪ পরগনা: মুখ্যমন্ত্রী কড়া বার্তা দিয়েছেন একদিন আগেই। অথচ সোমবারই তৃণমূলের গোষ্ঠীসংঘর্ষ প্রকাশ্যে। তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষে পানিহাটিতে ধুন্ধুমার। মার, পাল্টা মার, যুব তৃণমূল নেতার অফিসে অবাধে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল। প্রতিবাদে থানা ঘেরাওয়ের ঘটনাও ঘটল সোমবার। ২১ জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে দলনেত্রীর দেওয়া বার্তা কি তবে বিফলে গেল, উঠছে প্রশ্ন।
অভিযোগ, রবিবার রাতে তৃণমূল কর্মী রানা পালকে বেধড়ক মারধর করা হয়। রানার দাবি, রবিবার ঘোলায় বন্ধুর বাড়ি থেকে নিমন্ত্রণ খেয়ে ফিরছিলেন। একটি গাড়ি তাদের এমনভাবে চাপতে থাকে, তাঁরা পড়ে যান। রানার দাবি, সেই গাড়িতে পরিতোষ দাস ছিলেন। এই পরিতোষ বুবাই মল্লিক নামে এক যুব তৃণমূল নেতার ঘনিষ্ঠ বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তিনিই রানাকে জোর করে গাড়িতে তুলে পানিহাটিতে নিয়ে যান, মারধর করেন বলে অভিযোগ।
সোমবার সকালে থানায় বিষয়টি জানান বলে দাবি করেন রানা। এদিকে এই ঘটনাকে সামনে রেখে এলাকার যুব তৃণমূল নেতা বুবাই মল্লিকের অফিসে ভাঙচুর চালানো হয় বলে পাল্টা অভিযোগ ওঠে। তাতে আবার নাম জড়ায় রানাদের। বুবাই মল্লিক অভিযোগ করেন, তাঁদের পার্টি অফিস খুলতে বাধা দেওয়া হয়। তিনি বলেন, দলের একাংশ তাঁকে কাজও করতে দিচ্ছে না।
তবে রানা তা মানতে নারাজ। তাঁর দাবি, ভাল ছেলেদের উপর আক্রমণ করায় সাধারণ মানুষ রেগে যান। ওখানে পার্টি অফিস নেই, একটা দোকান আছে। বুবাই মল্লিকের সেই দোকানে অসামাজিক কাজকর্ম চলত। সেটাই সাধারণ মানুষ ভেঙে দেন।
রবিবারই ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “আমরা যত জিতব, তত আমাদের দায়িত্ব বাড়বে। এখানে বিত্তবান চাই না, বিবেকবান চাই।” তারপর দিনই পানিহাটিতে কেন এমন ছবি? পানিহাটি শহর তৃণমূলের সভাপতি তথা চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলেন, “এরা সমাজবিরোধী। এরা কোনও দল করে না। বুবাই মল্লিক আমাদের দল করত। দীর্ঘদিন ওকে দলের কোনও কাজে দেখি না। আর কেউ দল করে মানে তো অন্যায় করা নয়। তেমনটা হলে মানুষ তো প্রতিবাদ করবেই।”
এদিকে বুবাই মল্লিক বলছেন, তাঁকে শাসানো হয়। তাঁকে ভোটে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। নানাভাবে শাসানো হয়েছে। এদিন শুনলাম অফিসও ভেঙে দিয়েছে। এ নিয়ে বিজেপি নেতা সজল ঘোষ বলেন, “মমতাদির এই কথাটা বলাই উচিত না যে মারামারি করবে না। তৃণমূল যদি নিজেদের মধ্যে মারামারি না করে তৃণমূল বলে তো মনেই হবে না।”