বসিরহাট: বিয়ের পর থেকেই শুরু হয়েছিল অত্যাচার। কখনও টাকা পয়সার দাবি, কখনও আবার সোনা গয়না। ফের পণের বলি গৃহবধূ। ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বসিরহাটের হাড়োয়া থানার আটপুকুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কোকিলপুর গ্রাম। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গৃহবধূর নাম মেনকা সর্দার (২৩)। পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোকিলপুরের বাসিন্দা তাপস সর্দারের সঙ্গে বছর পাঁচেক আগে বিয়ে হয় মেনকা সর্দারের। মেনকার বাবার বাড়ি মাটিয়া থানার ঘোড়ারাস গ্রামে। পরিবারের সদস্যরা জানান, বিয়ের সময়ে যথাসাধ্য জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরও কখনও মোটা অর্থ, সোনা-গয়না ও নিত্যনতুন আসবাবপত্রের দাবি করতে থাকেন স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। চাহিদা পূরণ না হওয়ায় মেনকার ওপরে বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন তাপস।
বেশ কিছুদিন আগে তাঁদের একটি সন্তান জন্ম হয়। কিন্তু অসুস্থতার কারণে তার মৃত্যু হয়। তারপর থেকে মেনকার ওপর অত্যাচারের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। সেই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে একাধিকবার বধূ তাঁর বাপের বাড়িতে চলে যায়। সেখান থেকে বিভিন্ন সময়ে তাঁকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে আবার বাড়ি ফিরিয়ে আনে তাঁর স্বামী।
পরিবারের লোকের অভিযোগ, দিনের পর দিন চাহিদা মতো পণ দিতে না পারায় খুন করা হয়েছে তাঁদের মেয়েকে। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, মেনকার শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা আলাদা করে তাঁদের কিছু জানাননি। ঘরে ওই বধূর মৃতদেহ দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। দেখতে পাওয়া মাত্রই তাঁরা হাড়োয়া থানায় খবর দেয়। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। বধূর বাপের বাড়ির পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্তে নেমে স্বামী তাপস সর্দারকে আটক করেছে পুলিশ। ঠিক কি কারণে মৃত্যু? খুন না আত্মহত্যা? সবটাই তদন্ত করছে হাড়োয়া থানার পুলিশ।