বসিরাহাট: তৃণমূলের একাংশ কর্মীদের ক্ষোভের মুখে রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি ব্যক্তিগত ভাবে দল চালাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছেন ওই সকল তৃণমূল কর্মীরা। অসাধু চক্র তৈরি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন ওই তৃণমূল নেতা। এই বিষয়ে সুজিত বসুর কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। যদিও টিভি ৯ বাংলার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কী নিয়ে ঝামেলা?
বস্তুত, সাংগঠনিক বৈঠক ডেকে হাড়োয়া দু’নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ফরিদ জমাদারকে অপসারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন সুজিত বসু। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই হাড়োয়া দু’নম্বর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা ক্ষুব্ধ মন্ত্রী সুজিত বসুর উপর। মন্ত্রীর ছবিতে কাগজ মেরে তাঁর মুখ ঢেকে দেওয়া হয়। এরপরই ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মীরা সাংবাদিক সম্মেলন করেন। রাজ্যের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন।
হাড়োয়া ২ নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ফরিদ জমাদার ও হাড়োয়া ২ নম্বর ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি আবদুল খালেক মোল্লা সাংবাদিক বৈঠক করেন। তাঁদের দাবি, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পাশাপাশি বিগত লোকসভা নির্বাচনে বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি শেখ নুরুল ইসলামকে হাড়োয়া ২ নম্বর ব্লকের চারটি পঞ্চায়েত থেকে ৩২ হাজার ভোটে লিড দিয়েছেন। দু’নম্বর ব্লকের সীমান্তে আইএসএফের শক্ত ঘাঁটি ভেঙেছেন। এমনকী, সন্দেশখালির ঘটনার সময় বিজেপির উত্থানকে তোয়াক্কা না করে নির্বিঘ্নে হাড়োয়া দু’নম্বর ব্লক থেকে তৃণমূল কংগ্রেস বিপুল ভোটে লিড পাইয়ে দিয়েছেন। তারপরও দমকল মন্ত্রী হাড়োয়া দু’নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতিকে অপসারণ করার কেন নির্দেশ দিলেন? প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
ফরিদ জমাদার বলেন, “একটি মিটিং ছিল। উপস্থিত ছিলেন সুজিত বসু। তিনি বললেন হাড়োয়া ব্লক ২ নম্বর তৃণমূল সভাপতি বদল হবে। আমরা পঞ্চায়েত ভোট করলাম। লোকসভা করালাম। অথচ আমাকে ভরা মঞ্চে অপমান করা হল। আমি ব্যথিত। রাগে দলের কর্মীরাই ওঁর মুখে কাগজ সাঁটিয়েছে।” বিক্ষব্ধদের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনে হাড়োয়াতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মিনাখাঁর বিধায়ক ঊষা রানি মণ্ডল ও তাঁর স্বামীকে ভর্ৎসনা করেছিলেন। সেখানে রাজ্যের মন্ত্রী মিনাখাঁর সেই বিধায়ককে পাশে বসিয়ে সভাপতিকে অপসারিত করা হচ্ছে বলে ঘোষণা করছেন।
ফরিদ জমাদারের পাশে দাঁড়িয়ে আবদুল খালেক মোল্লা প্রশ্ন তোলেন, একজন শিক্ষিত সৎ ব্লক সভাপতি যিনি নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন, তাঁকে কীভাবে রাজ্যের মন্ত্রী অপসারিত করলেন? এমনকী তাঁদের সন্দেহ, এই বিষয়ে হয়ত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেউ কিছুই জানেন না। তিনি বলেন, “আমাদের সন্দেহ আছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদৌ বিষয়টি জানেন কি না। তাই মন্ত্রী সুজিত বসুর কথা আমরা প্রাধান্য দেব না। আমরা মুখ্যমন্ত্রী এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করি। দল যেটা সিদ্ধান্ত নেবে সেই সিদ্ধান্ত মেনে নেব।”