উত্তর ২৪ পরগনা: নিত্য দিন নতুন নতুন মহিলাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব আর তাঁদের আবাসনে নিয়ে এসে চলে উদ্দাম পার্টি! এলাকায় তৃণমূল নেতা হিসাবে পরিচিত যুবকের কাজে বিরক্ত হয়ে ওঠেছিলেন আবাসনের অনান্য আবাসিকরা। প্রতিবাদ করেছিলেন, তাতে কাজ না হওয়ায় এলাকারই অনান্য তৃণমূল কর্মীদের বিষয়টি জানিয়েছিলেন তাঁরা। তৃণমূল নেতার আচরণে ক্ষুব্ধ অনান্য তৃণমূল কর্মীরাও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। আর এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠল বেলঘরিয়ার প্রসাদনগর এলাকা।
বেলঘড়িয়া প্রসাদনগর আবাসন এলাকায় রাত্রিকালীন পার্টি চলাকে কেন্দ্র করে আরও একবার প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কামারহাটির মদন মিত্রের ঘনিষ্ঠ যুব তৃণমূল নেতা আরমান মালিক অভিযোগ করেন, বেশ কয়েক দিন ধরে বরানগরের যুব তৃণমূল নেতা শঙ্কর রাউত, তাঁর সঙ্গী ও বেশ কয়েক জন মহিলাদের নিয়ে এসে বেলঘড়িয়া প্রসাদ নগরের এক আবাসনে নিয়ম বহির্ভূতভাবে থাকেন। রাতে পার্টি করেন।
বৃহস্পতিবারও গভীর রাত পর্যন্ত ওই আবাসনের মহিলাদের নিয়ে পার্টি করছিলেন শঙ্কর রাউত। এর ফলে আবাসনে থাকা বাসিন্দারা অসুবিধায় পড়ছিলেন। এবং তাঁরা খবর দেন ওই এলাকারই অন্য তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের। ওই এলাকার তৃণমূল কর্মীরা আবাসনে গিয়ে প্রতিবাদ জানান।
প্রথমে কথা কাটাকাটি, তারপর হাতাহাতি। ধীরে ধীরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। কিল, ঘুষি, চড়-একে অপরের ওপর হামলা চলতে থাকে। আবাসনের অনান্য বাসিন্দারা প্রাথমিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাচ্ছে বুঝতে পেরে, তাঁরা খবর দেন থানায়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় বেলঘড়িয়া থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। পুলিশের সামনেই চলে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি।পরে বেলঘড়িয়া থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে পুলিস কাউকে এই ঘটনায় আটক কিংবা গ্রেফতার করেনি। এলাকার পরিস্থিতি থমথমে রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে যুব তৃণমূল নেতা আরমান মালিক বলেন, “শঙ্কর রাউত যাঁদের সঙ্গে ওঠাবসা করেন, তাঁদের খুব একটা ভালো পরিচিতি নেই। আমরা অনেকবারই বারণ করেছিলাম, শোনেননি। এলাকায় অপরিচিত প্রচুর লোক নিয়ে যাতায়াত করেন। কালও আবাসনে অপরিচিত লোকদের ঢুকিয়ে পার্টি করেছিলেন। নীচে তাঁর ড্রাইভার দাঁড়িয়েছিলেন। আমরা প্রশ্ন করতে, আমাদের সঙ্গে ওঁ ভালো ব্যবহার করেননি। ফোন করা হলে শঙ্কর রাউতও বাজে ব্যবহার করেন। আমাদের কথা শোনেননি। উল্টে আমাদেরই প্রশ্ন করেন আমরা কে? আমরা জানিয়েছিলাম, আমি সেক্রেটারি, এই এলাকার উপদেষ্টা। এলাকায় কেন রোজ অপরিচিত লোকদের ঢোকানো হচ্ছে? কথার উত্তর তো দেননি উল্টে খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা তখন বিষয়টা পুলিশকে জানাই।”
এ বিষয়ে বরানগরের যুব তৃণমূল নেতা শঙ্কর রাউত কিছু না বললেও, তাঁর সঙ্গে থাকা মহিলারা পাল্টা দাবি করেন, তাঁরা বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন পরিবার নিয়ে ওই আবাসনে। আর সেই সময় তৃণমূল নেতা আরমান মালিকের নেতৃত্বে তৃণমূল কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় তাঁদের ওপর হামলা করেন।
পুলিশের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। তবে ভয়ে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: জোরে-জোরে বাজানো হচ্ছিল মাইক, বাধা দিতে গিয়ে আক্রান্ত খোদ পুলিশকর্মীরাই