বসিরহাট: রাজ্য জুড়ে হিংসার অভিযোগ। ভোটের পর কোথাও খুন, কোথাও ভাঙচুর, কোথাও লুঠপাটের অভিযোগ। রাজনৈতিক বিরোধের ছবি এতোটাই প্রকট হয়েছে যে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এ রাজ্যে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিনিধিরাও। এরই মধ্যে রাজনৈতিক সম্প্রীতির অন্য ছবি ধরা পড়ল বসিরহাটে। প্রার্থী জিতেছেন বলে পুজোর ব্যবস্থা করেছিল তৃণমূল। আর তাতেই সামিল হলেন বিজেপি।
হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার কালিতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের পারঘুমটি গ্রামের ঘটনা। এই কেন্দ্রে জয় হয়েছেন, তৃণমূল প্রার্থী দেবেশ মন্ডল। একুশের বিধানসভার নির্বাচনে ২৪ হাজারের বেশি ভোটে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থীকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য বিধায়ক পদে শপথ নিয়েছেন তিনি। বিধায়কের জয়ের জন্য মানসিক করেছিল হিঙ্গলগঞ্জ বিধানসভার সুন্দরবনের তৃণমূলকর্মীরা। তাই তিনি জিতে শপথ নিয়ে গ্রামে ফিরতেই সেই পুজোর আয়োজন করা হয়। হিঙ্গলগঞ্জের পারঘুমটি গ্রামের সেই পুজোয় সামিল হন গ্রামের মানুষ। আর সেখানে উপস্থিত হতে দেখা যায় বিজেপি নেতাদেরও। পাশাপাশি সিপিএম, কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘গোটা বিশ্ব থেকে যোগাযোগ করছে আমার সঙ্গে!’, রাজ্যে হিংসার অভিযোগ নিয়ে ফের মুখ খুললেন রাজ্যপাল
বিধায়ক দেবেশ মণ্ডল বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ধর্ম যে যার উৎসব সবার। ধর্মে কোনও ভেদ থাকে না। তৃণমূলের জয়ের জন্যই শ্যামাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। আমার খুবই ভালো লাগছে যে, আমার বিজেপির বন্ধুরা বুঝিয়ে দিয়েছে যে আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। চারপাশে যখন হিংসার খবর, তখন এই ঘটনা বুঝিয়ে দিচ্ছে, রাজনৈতিক লড়াই আলাদা হলেও আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ নেই। এটা একটা নিদর্শন। তিনি আরও বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপামর জনসাধারণের মুখ্যমন্ত্রী, সবার জন্য কাজ করবেন। তাই ভেদাভেদ থাকা উচিত নয়।’
এলাকার বিজেপি নেতা মোহন সরকার, বিষ্ণুপদ মন্ডলদের মতে, রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা হলেও সবাই মিলেমিশে একসঙ্গেই আছে। এখানে কোনও রাজনৈতিক ভেদাভেদ নে্ই, হানাহানি-অশান্তির খবর নেই বলেও উল্লেখ করেছেন বিষ্ণুপদ মণ্ডল। উন্নয়নের স্বার্থে বিধায়কের পাশে থেকে কাজ করার বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। পেশায় শিক্ষক তৃণমূলকর্মী তুষার মন্ডল বলেন, ‘আমরা সুন্দরবনের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ। আমাদের মধ্যে কোনও ভেদাভেদ, হিংসা ও রাজনৈতিক সংঘর্ষ নেই। আমরা মিলেমিশে একসঙ্গে থাকি। আগামিদিনে সবাইকে নিয়ে হিঙ্গলগঞ্জের উন্নয়ন করাই মূল উদ্দেশ্য।’