উত্তর ২৪ পরগনা: কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বলে গিয়েছেন, ঠাকুরবাড়ি থেকে যে মতুয়া কার্ড দেওয়া হয়েছে তা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় নির্ভয়ে ঘুরতে পারবেন মতুয়ারা। তবে এ কার্ডকে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রের সমতুল মানতে নারাজ হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার। তাঁর বক্তব্য, এই কার্ডের সঙ্গে নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র এক পংক্তিতে কেউ বসালে তা ভুল বার্তা ছাড়া আর কিছুই নয়।
সোমবার উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা ব্লকের হেলেঞ্চাতে একটি বেসরকারি লজে বাগদা উদ্বাস্তু সেলের পক্ষ থেকে একটি সম্মেলন হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বনগাঁ উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া, হরিণঘাটার বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকাররা।
সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে অসীম সরকার বলেন, “একটা ঘটনা শুনলাম, কেন্দ্রীয় একজন মন্ত্রী এসেছিলেন। তিনি বলেছেন, ঠাকুরবাড়ি থেকে যে মতুয়া কার্ড দেওয়া হয়েছে তা নাকি নাগরিকত্বের প্রমাণ। আমি বুঝতে পারলাম না ওটা হিন্দুত্বের প্রমাণ হতে পারে। ওটা কখনও নাগরিকত্ব হয় না।”
পরে অসীম সরকার বলেন, “আমার কাছে বহু মতুয়া ফোন করেছেন, পত্রিকা থেকে ফোন করে বলা হয়েছে মতুয়া কার্ড থাকলে নাকি নাগরিকত্বের প্রমাণ আর কিছু লাগবে না? ওটাই নাকি নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র। এটা যদি কেউ বলে থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ ভাঁওতা দেওয়া কথা। যদি কেউ বলে থাকেন। কারণ আমি কথাটা তো নিজে কানে এখনও শুনিনি। কারণ, ওটা হিন্দুত্বের প্রমাণ হতে পারে। নাগরিকত্বের প্রমাণ কখনওই নয়।”
বিজেপি বিধায়কের আশঙ্কা, এই বার্তা বাজারে রটলে তাতে মারাত্মক পরিস্থিতি হতে পারে। কার্ড নিয়ে ব্যবসা শুরু হবে। ৫০০ টাকা দিয়ে লোকে কিনবে সে কার্ড। অসীম সরকার বলেন, “আমি অসীম সরকার, আমিও তো মতুয়াদের একজন। উদ্বাস্তুদের একজন। উদ্বাস্তু মানুষগুলো আমার মা, বাবা, ভাই, বোন। ভাঁওতায় পড়ে শুধু শুধু টাকা ধ্বংস হবে তা কী করে হয়। অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ থেকে কার্ড নিয়ে সেখানকার সদস্য হতে পারে। তবে এই উদ্দেশে কার্ড বিক্রি হলে কার্ডের জালিয়াতি শুরু হবে।”
যদিও রবিবারই অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি শান্তনু ঠাকুর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনির বক্তব্য খোলসা করে বলেন, “ওনার বলার উদ্দেশ্য হচ্ছে যতক্ষণ না আমরা নাগরিকত্ব পাচ্ছি, ততক্ষণ পর্যন্ত তো পরিচিতি নেই। জিআরপি ধরছে, নানা জায়গায় হেনস্থা হচ্ছেন। মন্ত্রী বলতে চেয়েছেন, এই কার্ডটা থাকা মানে এই সংঘের মানুষ ওনারা, ওনারা নিজেদের মহাসংঘের মানুষ হিসাবেই চিহ্নিত করতে পারবেন। এই কার্ডটা খুব মূল্যবান কার্ড হবে বলতে চেয়েছেন উনি।” তবে বিজেপি বিধায়ক অসীম সরকার এ বক্তব্যে যে খুব একটা সন্তুষ্ট নয়, সোমবার বুঝিয়ে দিয়েছেন তা। তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “আমরা তো প্রথম থেকেই বলে আসছি। অসীম সরকার আজ বুঝতে পেরেছেন তাই বলছেন। আসতে আসতে সমস্ত মানুষই তা বুঝতে পারবেন।”