Barasat: খাল চুরি দায় কার?
Cannel: প্রশাসনিক স্তরে যা নিয়ে শুধুই দায় ঠেলাঠেলি। তবে আগামী বর্ষার আগেই খালের হাল ফিরবে বলেই দাবি প্রশাসনের।
বারাসত: ‘ব্যস্ত সবাই এদিক ওদিক করছে ঘোরাঘুরি, বাবু হাঁকেন, ‘‘ওরে আমার গোঁফ গিয়েছে চুরি’’……’ গোঁফ হারিয়েছে ভেবে হেডঅফিসের বড়বাবু ঠিক যেমন শোরগোল তুলেছিলেন, দিনে দুপুরে চোখ মেললে এখন তেমনই শোরগোল বারাসত মহকুমার অলিগলিতে। বৃষ্টি হলেও গেল গেল রব নীচু এলাকাগুলিতে। কারণ বর্ষা পড়তেই নজরে এসেছে এলাকার অধিকাংশ ‘খাল গিয়েছে চুরি’। তাও আবার একটা আধটা নয়, তিন তিন খানা খালের অস্থিত্বই প্রায় সংকটে।
যা কিনা শহরের উপকন্ঠে নিকাশির মূল মাধ্যম। আর তারই অবশ্যাম্ভাবী ফলশ্রুতি অল্প বৃষ্টিতেই দু’পাশের এলাকার টানা জল যন্ত্রণা। কিন্তু এই চুরির মাঝেই লাখ টাকার প্রশ্ন, তবে খাল চুরি দায় কার? প্রশাসনিক স্তরে যা নিয়ে শুধুই দায় ঠেলাঠেলি। তবে আগামী বর্ষার আগেই খালের হাল ফিরবে বলেই দাবি প্রশাসনের।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, গত কয়েক দিনের এক টানা বৃষ্টিতে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় জল জমেছে । আর এই জমা জলের কারণ বাগজোলা খাল, নোয়াইখাল, বাণীকন্ঠ খাল সহ জেলার অন্যন্য গুরুত্বপূর্ণ খালগুলির মজে যাওয়া এবং পাড় বরাবর দখলদারি অর্থাৎ খাল চুরি। সম্প্রতি জেলা স্তরে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় খাল সংস্কার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার জন্য। তাতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এনিয়ে একটি সার্ভে করা হবে। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন। এনিয়ে বারাসাতের মহকুমাশাসক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই প্রথম পর্যায়ের মিটিং হয়েছে । খাল গুলি কিভাবে কি অবস্থায় রয়েছে তার সার্ভে করার জন্য টিম তৈরি করা হয়েছে । সার্ভে রিপোর্ট জমা পড়লেই খাল সংস্কারের বিষয়ে উদ্যোগী হবে সরকার । তবে এরই পাশাপাশি সেই বৈঠকে উঠে এসেছে খাল চুরির প্রসঙ্গ।
দেখা গিয়েছে, খালগুলির গা ঘেষে একাধিক বাড়ি তৈরি হয়েছে। অনেকক্ষেত্রেই খালের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার ফলে। খালগুলি তার স্বাভাবিক প্রস্থ হারিয়েছে। যেমন, বারাসাতের বাণীকন্ঠ খাল এক সময় প্রায় কুড়ি ফুট বা তারও বেশি চওড়া ছিল। সেই খাল যেমন এলাকার নিকাশির কাজ করত তেমনই পরিবহনের কাজেও ব্যবহৃত হত। অর্থাত্ বাণীকন্ঠ খালে রীতিমত নৌকা চলত। যা বর্তমানে পাকা হাই ড্রেনে পরিণত হয়েছে। অথচ এই খালই আজ পাড় বরাবর ‘চুরি’ হয়ে যাওয়ায় আর নাব্যতা হারানোয় বাণীকন্ঠ নগর, শরৎপল্লী, আপনপল্লী সহ বারাসাতের বিস্তীর্ণ এলাকায় জলমগ্ন হয়ে পড়ছে অল্প বৃষ্টিতেই। বারাসাত পৌর এলাকার মধ্যে খালের পাড়ে বা তার অংশে বাড়ি ঢুকে গিয়েছে একথা মানছেন মুখ্য পৌর প্রশাসকও।
যদিও খাল চুরির প্রশ্নেও তিনি টেনে আনছেন বাম আমলকেই। তাঁর দাবি, ২০০৫ থেকে ২০১০ সালে সিপিআই(এম) পরিচালিত পুর বোর্ডই এর জন্য দায়ী। কারণ আগে খাল যখন কাঁচা ছিল তখন জল জমত না। কিন্তু বড় পাকা হাইড্রেন করে দেওয়ার ফলে এখন জল ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়েছে। যদিও, পাল্টা প্রশাসনের দিকেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসীরে দাবি, সাধারণ মানুষের সমস্যার দিকে কর্ণপাত নেই প্রশাসকদের। খালের মধ্যে নোংরা আবর্জনা ময়লা পড়ে। নিয়মিত সংস্কার না হওয়ার কারণে জল ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। তবে সমস্যা মেটাতে আগামী বর্ষার আগেই খাল সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হবে বলে জানাচ্ছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: BJP: বিজেপি-কে ‘বহিরাগত’ বলে দাগিয়ে দেওয়া ছিল মমতার ভোট জেতার স্ট্র্যাটেজি, দাবি সুকান্তর