আটক করেও ছেড়ে দেওয়া হল অভিযুক্ত চিকিত্সককে! পানিহাটি ৩০০ টাকায় ভ্যাকসিনকাণ্ডে কতটা তত্পর প্রশাসন?

Panihati Vaccine case: টিকা নেওয়ার পর প্রদীপ বিল চান। তাঁর কথায়, "আমাকে বলেছিলেন, বিল আশিসের হাত দিয়ে পাঠিয়ে দেবো।"

আটক করেও ছেড়ে দেওয়া হল অভিযুক্ত চিকিত্সককে! পানিহাটি ৩০০ টাকায় ভ্যাকসিনকাণ্ডে কতটা তত্পর প্রশাসন?
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 15, 2021 | 9:18 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: কসবায় দেবাঞ্জনকাণ্ডে পর এবার পানিহাটি। টিকা দুর্নীতির পর্দাফাঁস হয় TV9 বাংলায়। খবর সম্প্রচার হতেই তদন্তের নির্দেশ দেন জেলাশাসক। আটক করাও হয় অভিযুক্ত চিকিত্সককে। কিন্তু তারপরেও ছেড়ে দেওয়া হয় অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে। ঘটনাকে ঘিরে শুরু হয়েছে জলঘোলা। তবে বিষয়টিকে নিয়ে তত্পর জেলা স্বাস্থ্য দফতর। তলিয়ে দেখা হচ্ছে জাল কতদূর।

৩০০টাকায় ভ্যাকসিন, তাও আবার পুরসভার স্ট্যাম্প দেওয়া অরজিন্যাল প্যাডে। কসবার পর শনিবার টিকা কেলেঙ্কারির হদিশ মেলে পানিহাটিতে। টাকার বদলে লাইনে না দাঁড়িয়ে টিকা-ঠিক এই টোপ দিয়েই সোদপুরের ধানকলে নিয়ে আসা হয়েছিল প্রদীপ মজুমদারকে। সঙ্গে টিকা নিতে আসেন অমিত বিশ্বাস ও কল্যাণী বিশ্বাস।

টিকা নেওয়ার পর প্রদীপ বিল চান। তাঁর কথায়, “আমাকে বলেছিলেন, বিল আশিসের হাত দিয়ে পাঠিয়ে দেবো।” প্রদীপের দাবি, আশিস আসলে অমিত বিশ্বাসের সহকর্মী। তাঁর কাছ থেকে টিকাকরণের খবর পেয়েছিলেন অমিত। জানিয়েছিলেন প্রদীপকেও।

টিকাকরণ পর্যন্ত কারোর কোনও সন্দেহ হয়নি। গণ্ডগোল হয় সার্টিফিকেট হাতে আসতেই। প্রদীপ বলেন, “যেটা দেওয়া হয়, সেটা আসলে মিউনিসিপ্যালিটির কাগজ। টাকা দেওয়ার কোনও রসিদও নেই।” বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর শুরু করে TV9 বাংলা। যোগাযোগ করা হয় বিশ্বনাথ পারিকের সঙ্গে। কীভাবে তিনি ৩০০ টাকায় টিকার ব্যবস্থা করলেন? এই বিশ্বনাথ পারিখই তিন জনকে সোদপুর মোড় থেকে ওই টিকাকেন্দ্রে নিয়ে যান তিন জনকে। তিনি বলেন, “আমি কাউকে নিয়ে যায়নি।” অনেক টালবাহানার পর বিস্ফোরক স্বীকারোক্তি করেই ফেলেন তিনি।

খবর সম্প্রচারের পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অভিযুক্ত চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্রকে সাময়িকভাবে আটক করা হয়। তাঁকে তাঁর ক্লিনিক থেকে গ্রেফতার করে খড়দহ থানার পুলিশ। পানিহাটি পৌরসভার স্বাস্থ্য দফতর থেকে অফিসাররা যান সমস্ত পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে।

যদিও পানিহাটি পৌরসভার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই চিকিত্সক বিপ্লব রুদ্র পানিহাটি পৌরসভার স্বাস্থ্য দফতরে একজন চিকিত্সক হিসেবে নিয়োগ রয়েছেন । খড়দা থানা পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যাচ্ছে।

পানিহাটির পর্দাফাঁস কাণ্ডে স্বাস্থ্য অধিকর্তা জানিয়েছেন, অভিযুক্তদের মধ্যে একজন পুরসভার আংশিক সময়ের মেডিক্যাল অফিসার। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায় জানিয়েছেন, বিপ্লব রুদ্র নামে যে চিকিৎসককে আটক করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, তিনিই ওই অভিযুক্ত মেডিক্যাল অফিসার।

উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তত্পর জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তাপস রায়ও। তিনি বলেন, “সব বিষয়ে জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।” তবে এ সবের পরও প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুরসভার হেফাজত থেকে টিকা চুরি হয়েছে? আরও পড়ুন: পানিহাটিতে ৩০০ টাকা দিলেই মিলছে টিকা, পুরসভার প্যাডে ছাপানো শংসাপত্র!