পানিহাটিতে ৩০০ টাকা দিলেই মিলছে টিকা, পুরসভার প্যাডে ছাপানো শংসাপত্র!

TV9 Bangla Impact: নির্ধারিত ১৭ জুন তারিখে টিকা নিতে যান প্রদীপ। অভিযোগ, টিকা নেওয়ার পরেই নিয়মমতো শংসাপত্র চান তিনি। অভিযোগ, বলা হয় রসিদ নেই। এমনকী টিকার দাম ৩০০ টাকা দেওয়ার জন্য যে রসিদ তাও দিতে অস্বীকার করেন টিকাদাতারা।

পানিহাটিতে ৩০০ টাকা দিলেই মিলছে টিকা, পুরসভার প্যাডে ছাপানো শংসাপত্র!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 14, 2021 | 3:58 PM

পানিহাটি: টিভি নাইন বাংলার খবরের জেরে পানিহাটিতে টিকাকাণ্ডের পর্দাফাঁস! দেবাঞ্জন-কাণ্ডের পর ফের পানিহাটিতে টিকা জালিয়াতি। অভিযোগ, মাত্র ৩০০ টাকা দিলেই মিলছে টিকা। শুধু তাই নয়, টিকা নেওয়ার তিনদিন পর পুরসভার প্যাডে ছাপানো শংসাপত্র! পানিহাটিতে এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠে এসেছে।

প্রদীপ মজুমদার নামে মধ্যমগ্রামের এক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, কিছু মাস আগে তাঁরই প্রতিবেশী অমিত বিশ্বাস জানান, ৩০০ টাকা দিলেই টিকা পাওয়া যাবে, লাইনে না দাঁড়িয়েই। ঝঞ্ঝাট এড়াতে ওই প্রতিবেশীর কথাতেই  রাজি হয়ে যান প্রদীপবাবু। জানতে পারেন পানিহাটিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। তিনি রাজী হওয়ার পরেই বিশ্বনাথ পাইক নামে এক ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। প্রদীপবাবুকে জানানো হয়, পানিহাটির ধানকল মোড়ে একটি গলির ভিতরে চিকিত্‍সক রুদ্র পালের ক্লিনিকে টিকা দেওয়া হবে। সেইমতো নির্ধারিত ১৭ জুন তারিখে টিকা নিতে যান প্রদীপ। অভিযোগ, টিকা নেওয়ার পরেই নিয়মমতো শংসাপত্র চান তিনি। অভিযোগ, বলা হয় রসিদ নেই। এমনকী টিকার দাম ৩০০ টাকা দেওয়ার জন্য যে রসিদ তাও দিতে অস্বীকার করেন টিকাদাতারা। প্রদীপবাবু জোরাজুরি করলে বলা হয় তাঁর অন্য একটি যোগাযোগ নম্বর দিতে এবং শংসাপত্রের জন্য তিনদিন অপেক্ষা করতে হবে।

তিনদিন পর হাতে শংসাপত্র পান ওই টিকাপ্রাপক। অভিযোগ, শংসাপত্রটি পুরসভার প্যাডে ছাপানো। তাতে সই রয়েছে, স্ট্যাম্পও রয়েছে! শুধু তাই নয়, প্রদীপবাবু বিকল্প যোগাযোগের নম্বর হিসেবে নিজের স্ত্রীর নম্বর দিয়েছিলেন। সেই নম্বরে একটি মেসেজ আসে। যেখানে বলা হয়, গত ১৯ এপ্রিল প্রথম ডোজ ও ১১ অগস্ট দ্বিতীয় ডোজ পেয়ে গিয়েছেন প্রদীপবাবু। অথচ, গত ১৭জুন প্রথম ডোজই নিয়েছিলেন প্রদীপ। ঘটনায় যে কোনও বড়সড় জালিয়াতি চক্র জড়িয়ে রয়েছে তা অস্বীকার করতে পারছেন না সংশ্লিষ্ট মহল।

প্রশ্ন উঠছে, এই টিকাকরণ কর্মসূচি যে চলছিল তা কি অনুমোদিত? কার অনুমোদনে চলছিল এই কর্মসূচি? এলাকাবাসীরাও কি জানতেন এই টিকাকরণ প্রসঙ্গে? স্থানীয়রা জানিয়েছে, ওই চিকিত্‍সক রুদ্র পালের ক্লিনিকে অনেকেই চিকিত্‍সা করাতে আসতেন, তবে যে সেখানে টিকাকরণ চলছে তা ঘুণাক্ষরেও জানতেন না কেউ। দ্বিতীয় প্রশ্ন, এই টিকার জোগান আসছিল কোথা থেকে? যেখানে স্বাস্থ্য দফতর থেকে অনুমোদন ছাড়া টিকা পাওয়া সম্ভব নয়, সেখানে কী করে পাওয়া গেল ভ্যাকসিনের জোগান? তৃতীয়ত, পুরসভার প্যাডে কী করে ছাপানো হল শংসাপত্র? দেবাঞ্জন-কাণ্ডের পর যখন বারবার সতর্ক করা হয়েছে পুরসভাগুলিকে, তখন, পুরসভার প্যাড কী করে বেহাত হল? পানিহাটি পুরসভা সূত্রে খবর, ওই প্যাড পুরসভারই। কিন্তু, তা কী করে পুরসভার বাইরে গেল সে বিষয়ে অন্ধকারে পুরকর্মীরা। অন্যদিকে, বাজারে যেখানে কোভিশিল্ডের দাম ৭৮০ টাকা, সেখানে ৩০০ টাকায় কী করে দেওয়া হচ্ছিল ভ্য়াকসিন? আদৌ কি তা করোনা টিাক না জাল টিকার জোগান দেওয়া হচ্ছিল?

টিভি নাইন বাংলার খবরের জেরেই সামনে আসে এই ভ্যাকসিন জালিয়াতির ছবি। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই, পানিহাটির ওই চিকিত্‍সকের ক্লিনিকে পৌঁছেছে পুলিশ। জেলাশাসক জানিয়েছেন বিশেষ কমিটি গঠন করে গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখা হবে। আরও পড়ুন: বরযাত্রী যাওয়ার আগে পথেই শেষ! ফলতায় সলিল সমাধি ৩ নাবালক-সহ ৫