বারাসত: বিয়ের আর মাত্র পাঁচ মাস বাকি। তার আগেই এল উদ্বেগের খবর। উদ্বেগ আর শূন্যতায় প্রহর কাটছে বারাসতের হৃদয়পুরের রায় পরিবারের। কলকাতা খিদিরপুর ডক থেকে আন্দামানের পোর্টব্লেয়ারে যাওয়ার পথে বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায় পণ্যবাহী জাহাজ। তাতেই ছিলেন রায় পরিবারের ছেলে রাহুল রায়।
কোম্পানির উচ্চপদে কর্মরত আধিকারিক সুবোধ রায় জানান, তাঁর ছেলে ওই জাহাজেই ছিলেন। তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। কলকাতার একটি বেসরকারি জাহাজ কোম্পানি আইটিটির ওই জাহাজটি ১৫ বছরের পুরনো। সুবোধবাবুর দাবি, জাহাজের ১১ জন কর্মীকে উদ্ধার করা হলেও এখনও রাহুল রায় ও ক্যাপ্টেন সহ তিনজন নিখোঁজ। তাদের খোঁজে কোস্ট গার্ড ও ইন্ডিয়ান এয়ার ফোর্সের হেলিকপ্টার তল্লাশি চালাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালেই পুনে থেকে দাদার নিখোঁজের খবর শুনে হৃদয়পুরের বাড়িতে পৌঁছেছেন রাহুলের ছোট ভাই রোহন রায়। উদ্বেগের মাঝেই এদিন সুবোধ রায় অভিযোগ করেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “সরকার ও প্রশাসনের দেখা উচিত, যে জাহাজগুলি গভীর সমুদ্রে যাচ্ছে সেগুলির ফিট সার্টিফিকেট আছে কি না। অনেক বেসরকারি কোম্পানি পুরনো জাহাজ চালায়। তাতে যেমন জাহাজ কর্মীদের মৃত্যু হয় তেমনই লোকসানের মুখে পড়ে অন্য সরবরাহকারী কোম্পানিগুলি।”
রাহুল যে সংস্থায় কাজ করতেন, তার তরফ থেকে পরিবারকে জানানো হয়, গত ২৫ অগস্ট জাহাজটি রওনা দেয় খিদিরপুর ডক থেকে পোর্ট ব্লেয়ারের দিকে। ২৬ তারিখ বিকেল চারটে নাগাদ জাহাজটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কলকাতা থেকে ৯০ নটিকাল মাইল দূরে টালমাটা হয়ে যায় জাহাজটি।
সেই জাহাজ থেকে ১১ জনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি তিনজন এখনও নিখোঁজ। শোকাচ্ছন্ন গোটা রায় পরিবার। উদ্বেগে আছেন তাঁর আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুবান্ধবরা। ৭২ ঘন্টা পার হয়ে গেল এখনও কেন উদ্ধার করা হল না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাহুলের বাবা সুবোধ রায়।
আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা। সে সবই এখন অনিশ্চিত। ছেলে ঘরে ফিরবে, এই আশায় প্রহর গুনছে রায় পরিবার।