সন্দেশখালি: তপ্ত সন্দেশখালি। ফুঁসছেন এলাকার সাধারণ মহিলারা। ভয়ঙ্কর সব অভিযোগ উঠে আসছে। রাস্তায় নেমে সরব হচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিক্রিয়া আসছে। তৃণমূল-বিজেপি সব পক্ষে নিজেদের মতো করে মুখ খুলছে। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও আজ সন্দেশখালিতে গিয়েছিলেন। রাজ্য মহিলা কমিশনও ঘুরে এসেছে সন্দেশখালি থেকে। কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণভাবে স্থানীয় সাংসদ অভিনেত্রী নুরসত জাহান এতদিন চুপ ছিলেন। যখন সন্দেশখালি ফুঁসছে, তখন এলাকার সাংসদ কোথায়? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছিলেন অনেকেই। অবশেষে মুখ খুললেন নুসরত। টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিকে ফোনে সাংসদ অভিনেত্রী বললেন, তিনি নিয়মিতভাবে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। খোঁজখবর নিয়েছেন।
বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ বললেন, ‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমি নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। প্রশাসন যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিচ্ছে। পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটাকে নিয়ে রাজনীতি করা উচিত নয়। আর আমার কাজ আগুনে ঘি দেওয়া নয়। আমাদের সকলের কাজ এটাই হওয়া উচিত, যাতে আগুন নেভানো যায়। তাই সকলের উচিত প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করা। যাতে প্রশাসনের লোকেরা নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করা উচিত।’
কিন্তু এলাকার সাধারণ মহিলারা যে চাইছেন নিজেদের সাংসদকে এই কঠিন সময়ে পাশে পেতে। যদি তারকা সাংসদ নুসরতের সাফাই, তিনি যদি ঘটনাস্থলে যান, তাহলে তাঁর সঙ্গে আরও পাঁচ জন যাবেন। বললেন, ‘আমি যাওয়ার মানে হচ্ছে, আমি যদি যাই, আমার সঙ্গে তো আরও পাঁচ জন লোক যাবে। ওখানে যে পরিস্থিতি রয়েছে, সেটাকে সম্মান করতে হবে। প্রশাসন সেখানে যে বিধি জারি করেছে (১৪৪ ধারা), সেটাকে আমাদের সম্মান করতে হবে।’
নুসরত মুখ খোলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষও। তাঁর বক্তব্য, ‘এই মহিলারা, যাঁরা আজ রাস্তায় লাঠি-সোটা নিয়ে নেমেছেন, তাঁদের মুখোমুখি হতে চান না বলেই তিনি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। কিন্তু তাঁকে যাঁরা ভোট দিয়ে জিতিয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন না। কারণ, তিনি ওই মহিলাদের মুখোমুখি হতে চান না।’
বামেদের তরফে কলতান দাশগুপ্ত বলেন, ‘মানুষের থেকে বেশিদিন পালিয়ে থাকা যাবে না। ওনাকে তো মানুষের সামনে আসতে হবে। তৃণমূলে তো রাজনীতি বোঝানো হয় না। পার্টি ক্লাস হয় না। হলে বোঝাতে পারত, সাংসদ-বিধায়ক আসলে থাকা মানে, এলাকার মানুষের যন্ত্রণার উপশম করা। ওনাদের বোঝানো হয়েছে, শুধুমাত্র ভোটে দাঁড়িয়ে জিতে গেলেই হয়ে যাবে। মাঝে মধ্যে এলাকায় গিয়ে হাত নাড়ালেন হয়ে যাবে। মানুষের জন্য কতটা কাজ করতে হয়, কতটা যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়, সে বিষয়ে ওনাদের ধারণা নেই।’