সড়বেরিয়া: সুকুমার রায়ের নোটবুক কবিতা মনে আছে? হাতে একটা পেন্সিল থাকলেই সবটা নোটবুকে সবটা লেখা থাকত? সন্দেশখালির ঘটনাও যেন সেই বিষয়টা মনে করাচ্ছে। দীর্ঘ প্রায় চার ঘণ্টা অতিক্রান্ত। রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে চলে তল্লাশি। বাড়ির দুটি তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করার পর শাহজাহানের আলমারি, ট্রাঙ্ক, বিছানা-চাদর উল্টে ঘেঁটেঘুটে দেখেন গোয়েন্দারা। শুধু কী তাই? শাহজাহানের বাড়ির ছাদে পর্যন্ত পৌঁছে যান গোয়েন্দারা। জলের ট্যাঙ্কের ভিতরও দেখেন তাঁরা। হয়ত বা ভেবেছিলেন কোনও নথি যদি পাওয়া যায়! সব কিছু খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখেন তাঁরা। যা যা তথ্য পান তার সবটা নোট করেন ল্যাপটপে। তবে আদৌ কি পেলেন কিছু? হ্যাঁ! মিলল, তবে ‘পেন্সিল’। কেন বলুন তো? কারণ, যে আশা নিয়ে ইডি আধিকারিকরা সেখানে গিয়েছিলেন সেই আশা কার্যত পূরণ হয়নি। যা যা পেয়েছেন সবটাই শুধু লিখে রাখতে হয়েছে ল্যাপটপে।
বস্তুত, সন্দেশখালিতে প্রথমবার গিয়ে আক্রান্ত হওয়ার ১৯ দিন বাদে আবার সেখানে গিয়েছে ইডি। প্রথম থেকেই প্রশ্ন উঠছিল এতদিন পর শাহজাহানের বাড়ি গিয়ে কি রেশন দুর্নীতির কোনও তথ্য পাওয়া যাবে? উত্তর এল। ইডি সূত্রে জানা গেল, চার ঘণ্টা তল্লাশির পর এখনও বিশেষ কোনও নথি মেলেনি। কিছু খালি ব্রিফকেস রয়েছে। আর একগাদা জামা কাপড় পাওয়া গিয়েছে শাহজাহানের আলমারি থেকে। তবে নথি কিন্তু কিছু নেই। গোয়েন্দারা মনে করছেন, শেখ শাহাজাহান পালিয়ে যাওয়ার আগে সমস্ত নথি নিয়ে গিয়েছেন।
উল্লেখ্য, আজ মোট ১৩ আধিকারিকের দল প্রবেশ করেন শাহজাহানের বাড়ির ভিতরে। এর মধ্যে ৬ আধিকারিক, ২ স্থানীয় সাক্ষী, ৩ ইডির সাক্ষী, ১ জন তালা ভাঙার মিস্ত্রি ও ১ ইডি ভিডিয়োগ্রাফার ছিলেন দলে। এ দিনের তদন্তে এই তৃণমূল নেতার বাড়িতে প্রবেশের আগে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে ইডির। পুলিশ আধিকারিকরা ইডি আধিকারিকদের কাছে সার্চ ওয়ারেন্ট দেখতে চান। সেই নিয়েই চলে কিছুটা তর্ক-বিতর্ক। পরে যদিও সার্চ ওয়ারেন্ট দেখান গোয়েন্দারা। এরপরই ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় তাঁদের। ফলে ইডির হাতে কোনও নথি আসায় ওয়াকিবহাল মহল মনে করছেন এ যেন গোয়েন্দাদের হাতে শুধু পেন্সিল টুকুই রয়ে গেল। কোনও রহস্যের তথ্য নথিবদ্ধ করতে পারলেন না তাঁরা।