দক্ষিণেশ্বর: স্বামীর মৃত্যুর পর স্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। প্রায় বছর ২০ আগে তাঁর স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল। তখন তাঁর দুই পুত্র সন্তানকে নিয়ে একাই সংসার চালাতেন জসবীর কৌর। অসহায় অবস্থা দেখে শিখ সমাজের তরফ থেকে তাঁকে স্কুলে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছিল। তারপর অনেক বছর কেটে গিয়েছে। স্কুলে ‘জসবীর ম্যাম’কে পছন্দ করতেন ছাত্রছাত্রীরা। অবসরের আর মাত্র বছর দুয়েক বাকি। তার মধ্যে কী এমন হল যে নিজেকে শেষ করে দিতে হল তাঁকে!
উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণেশ্বর এলাকার ঘটনা। ৫৮ বছর বয়সী ওই প্রৌঢ়ার বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার উদ্ধার হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। তাঁর এই পরিণতি দেখে অবাক স্কুলের পড়ুয়া থেকে প্রতিবেশীরা। অভিযোগ, ওই প্রৌঢ়ার সঙ্গে দিনের পর দিন অবিচার হয়েছে স্কুলে। ফেসবুকে পোস্ট করা এক ভিডিয়োতে তিনি নিজেই সেই কথা বলে গিয়েছেন।
নিজের স্কুলের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আত্মঘাতী হন ওই স্কুল শিক্ষিকা প্রৌঢ়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো পোস্ট করেই তিনি আত্মঘাতী হন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। তাঁর দুই ছেলে বিদেশে থাকেন। এখনও পর্যন্ত তাঁরা বাড়িতে এসে পৌঁছতে পারেননি। ভিডিয়োতে স্কুলের পরিচালন কমিটি ও প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন তিনি। এই বিষয়ে দক্ষিণেশ্বর থানার অভিযোগ জানাচ্ছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, ২০ বছর ধরে ওই স্কুলে চাকরি করার পর এখন নতুন কমিটি এসে ওই শিক্ষিকার কাছে টিচার্স ট্রেনিং সার্টিফিকেট চাইছে। ওই সার্টিফিকেট তাঁর নেই। আর সেটা না দিতে পারায় দিনের পর দিন তাঁকে মানসিকভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। শিক্ষিকার দেহ বৃহস্পতিবার রাতেই সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শুক্রবার ময়নাতদন্ত হবে। এদিকে, শিক্ষিকার মৃত্যুর খবরে স্তম্ভিত ছাত্রছাত্রীরাও। এক প্রাক্তন ছাত্র জানান, খুবই স্বল্পভাষী ও নরম স্বভাবের শিক্ষিকা ছিলেন ‘জসবীর ম্যাম’। তাই তাঁর সঙ্গে কী এমন ঘটল, তা জানতে সঠিক তদন্ত চাইছেন ছাত্ররা।