Thakurbari BJP Clash: ‘স্ত্রীকে দাঁড় করানোর জন্যই…’, শান্তনুর বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক সুব্রত, মতুয়াবাড়ির বিজেপি বৃত্তে আরও চওড়া ফাটল?
Thakurbari BJP Clash: কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের পরিবারের রাজনৈতিক বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে এর আগে। এবার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বিবাদ চরমে আর তাও প্রকাশ্যে। কিন্তু কেন এই বিভাজন?

উত্তর ২৪ পরগনা: মতুয়া ঠাকুরবাড়ির বিজেপি বৃত্তে অশান্তি এখন চরমে। শান্তনু ও সুব্রত ঠাকুরের দ্বন্দ্বে সরগরম ঠাকুরবাড়ি। ভাই শান্তনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দাদা সুব্রতর। লোভ, ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ শান্তনু, বিস্ফোরক মন্তব্য করেন সুব্রত। তিনি অভিযোগ করেন, বিজেপি ব্ল্যাকমেল করে মন্ত্রিত্ব পেয়েছেন। তৃণমূলে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে বিজেপিকে ব্ল্যাকমেল করেছেন শান্তনু। তাঁর আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, গাইঘাটায় স্ত্রীকে দাঁড় করাতে চাইছেন শান্তনু। তাই রাজনৈতিকভাবে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের সঙ্গে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুরের পরিবারের রাজনৈতিক বিভাজন প্রকাশ্যে এসেছে এর আগে। এবার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরের সঙ্গে বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের বিবাদ চরমে আর তাও প্রকাশ্যে। কিন্তু কেন এই বিভাজন? এই প্রশ্ন করতেই বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুর বলেন, “যখন লোভ আর ক্ষমতার দম্ভ, অহংকার যখন বেড়ে যায়, তখন মানুষ এই ধরনের ব্যবহার করতে থাকেন। ১০০ শতাংশ প্রোপোগন্ডা। আগের আমার নামে এরকমভাবে ছড়িয়েছে। রাজনৈতিকভাবে যদি আমাকে সরিয়ে দেওয়া যায়, তাহলে একাই নীতি নির্ধারক হবে। আমাকে সরিয়ে দিতে পারলে ওর বউকে টিকিট দেবে। বিজেপি ব্ল্যাকমেল তো শান্তনু ঠাকুর করে।” তিনি আরও বলেন, “একটা দিক হচ্ছে বনগাঁয় কে জেলা সভাপতি হবে, ওর মনের মতো লোক না হলে বারবার হুমকি দেয়, আমি এখানে চলে যাব, ওখানে চলে যাব, আমি সবার আগে তৃণমূলে যাব। মন্ত্রিত্ব এটাও ব্ল্যাকমেল করে নিয়ে আসব। ২০২৪ সালের ভোটের প্যাটার্ন দেখলেই বোঝা যাবে।” তিনি অভিযোগ করেন, সামাজিক মাধ্যমে ভোট পরবর্তী শান্তনু ঠাকুরের পোস্ট দেখলেই বোঝা যাবে, তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মতুয়া মহাসঙ্ঘের বিভিন্ন লোককে দিয়ে সেই পোস্টিং করানো হয় বলে অভিযোগ করেন।
পাল্টা ইর্ষার অভিযোগ তুলেছেন শান্তনু ঠাকুর। তিনি বলেন, “আমি কেন ওপরে উঠে গেলাম, এটাই মূল কারণ। আর বাকি কিছু নেই। শান্তনু ঠাকুর কেন মন্ত্রী হল, কেন সে হতে পারছে না, এটাই কারণ।” সুব্রত ঠাকুর তৃণমূলে যেতে পারেন বলেও পরোক্ষে ইঙ্গিত দিলেন। তিনি বললেন, “বিজেপিতে তো বিধায়ক থেকে মন্ত্রী হওয়া যায় না, তাই তৃণমূলে যেতে হবে। একটা নাটক তৈরি করতে হবে, যাতে আমার সমর্থনে লোক থাকে।”
যদিও ঠাকুরবাড়ির এই অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে বিজেপি নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এটা তো ঠাকুরবাড়ির ঝামেলা, তার সঙ্গে বিজেপির কী সম্পর্ক? দুই ভাইয়ের মধ্যে মন কষাকষি হয়েছে, আবার মিটেও যাবে হয়তো। কে কাকে ব্ল্যাকমেল করেছে, এমন কোনও ঘটনার কথা আমাদের জানা নেই।”
প্রসঙ্গত, দেশে SIR কার্যকর হওয়ার পর থেকেই ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়িতে মতুয়া সমাজের জন্য সাহায্য করতে CAA ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। তাতে কীভাবে আবেদনপত্র পূরণ করতে হয়, তার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। রবিবারও এরকম একটা প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করেছিলেন শান্তনু ঠাকুর। সেই ক্যাম্পে দুই ভাইয়ের বিবাদ প্রকাশ্যে আসে। ঠাকুরবাড়ির নাটমন্দিরে কেন ক্যাম্প, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সুব্রত। আর তা নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত। সুব্রতের প্রশ্ন, ‘‘নাটমন্দির ভক্তদের জায়গা, সেখানে কেন সিএএ সহযোগিতা শিবির চলবে?’’ শান্তনু বলছেন, ‘‘নাটমন্দিরে তো ভক্তদের জন্যই কাজ চলছে।” আর সোমবার সেই জল গড়াল বহুদূর।

