Ration Scam: রেশনে নোংরা চাল দেওয়া থেকে, বালুর মেয়েকে স্করপিও ‘গিফট’, গ্রেফতার হওয়া দুই TMC নেতার ‘কীর্তি’ জানেন?
Ration Scam: জানা গিয়েছে, প্রায় তিরিশ থেকে বত্রিশ বছর আগে আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশের বাবা রাইস মিলের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মামাতো দাদা বাকিবুর রহমান। তৎকালীন বাম আমলের খাদ্যমন্ত্রী কালিমউদ্দিন সাম-এর সঙ্গে সুসম্পর্ক হওয়ায় বাকিবুর রহমান আলাদা ব্যবসা করে বেরিয়ে এসেছিলেন।
উত্তর ২৪ পরগনা: রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার দুই তৃণমূল নেতা। একজন তৃণমূল কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশ। অপরজন তাঁর ভাই আলিফ নুর ওরফে মুকুল। তদন্তের অসহযোগিতার অভিযোগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র হাতে গ্রেফতার হন দু’জন। এই দুই ভাই আবার রেশন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া চালকল ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমানের মামাতো ভাই। পাশাপাশি এই দু’জনের সঙ্গে প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠতাও ছিল বলে খবর। জানা যায়, প্রাক্তন মন্ত্রীর মেয়ে প্রিয়দর্শিনী মল্লিকের বিয়েতে নাকি স্করপিও গাড়িও উপহার দিয়েছিলেন। কীভাবে উত্থান আনিসুর ও আলিফ নূরের। কারোও কি হাত ছিল তাঁদের মাথায়?
আনিসুর রহমান ও আলিফ নূরের উত্থান
জানা গিয়েছে, প্রায় তিরিশ থেকে বত্রিশ বছর আগে আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশের বাবা রাইস মিলের ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সেই সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মামাতো দাদা বাকিবুর রহমান। তৎকালীন বাম আমলের খাদ্যমন্ত্রী কালিমউদ্দিন সাম-এর সঙ্গে সুসম্পর্ক হওয়ায় বাকিবুর রহমান আলাদা ব্যবসা করে বেরিয়ে এসেছিলেন। মনে করা হয় সেই সুসম্পর্কের জেরেই রাইস মিল থেকে সরাসরি ডিস্ট্রিবিউটারদের খাদ্য সামগ্রী পাঠানোর কাজ করতেন বাকিবুর রহমান ও বিদেশের বাবা।
এরপর ২০১৬ সালের আগে পর্যন্ত আনিসুর রহমান ও তাঁর দাদা আলিফ-নুর দু’জনেই বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে খবর। সূত্রের খবর, তৎকালীন দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডলের উত্থান হওয়ার পর তিনিই প্রথম নাকি উত্তর ২৪ পরগনার ‘যুব আইকন’ পার্থ ভৌমিকের কাছে দাবি করেছিলেন আনিসুরকে যুব সভাপতি করতে হবে স্থানীয় স্তরে। তবে মনে করা হয় এসব কিছুর মাথায় হাত ছিল প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
তৃণমূলে যোগ দেওয়া ও সঙ্গে-সঙ্গে পদ পেয়ে যাওয়ার পর থেকেই বিদেশ,বাকিবুর,মুকুল প্রত্যেকের খাদ্য দফতরে অগাধ যাতায়াত শুরু হয়। সেই থেকেই খাদ্য দফতরের খাদ্য দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে বকিবুর,বিদেশ,মুকুল বলে খবর।
অভিযোগ, রেশনে নোংরা চাল দেওয়া থেকে শুরু করে, কখনো কখনো ডিস্ট্রিবিউটরের ঘরে মাল পৌঁছে না দিয়েই রাইস মিল থেকে মাল বেরিয়েছে বলে ভুয়ো বিল করার মতো একধিক অভিযোগ উঠেছে এই দু’জনের বিরুদ্ধে।
২০১৮ সালে আনিসুর রহমান বিদেশ সরাসরি রাজনীতিতে চলে আসেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ভোটে দাঁড়ান। এরপর কর্মাধ্যক্ষের পদ পান তিনি। শোনা যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের মেয়ের বিয়েতে স্করপিও গাড়ি গিফট করেছিলেন আনিসুর রহমান ওরফে বিদেশ।
২০২১ এর বিধানসভা ভোটেও দেগঙ্গা থেকে তৃণমূলের হয়ে লড়াই করতে চেয়েছিলেন। তবে সেই সময় জ্যোতিপ্রিয়র ক্ষমতা ‘কমতে’ থাকায় সেই ইচ্ছা যদিও পূরণ হয়নি। কানাঘুষো শোনা যায়,এরপর তিনি নাকি সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শুধু তাই নয়, ‘নব জোয়ার’-এর সময় অভিষেকের সঙ্গে একা এই বিদেশ হেঁটেছিলেন তাঁর পাশে। সেই সময় জেলার বাকি নেতৃত্ব ছিল পিছনে। এর জেরে স্থানীয় স্তরে বিদেশে প্রতিপত্তি আরও বাড়তে শুরু করে তাঁর।
বর্তমানে দেগঙ্গার সহ-সভাপতি, পাশাপাশি ব্লক সভাপতিও তিনি। আর রাজনৈতিকভাবে পদ দখলের লড়াইয়ে যখন বিদেশ রয়েছেন, সেই সময় তাঁকে যোগ্য সঙ্গে দিয়েছেন তাঁর দাদা আলিফ নূর ওরফে মুকুল। গোটা ব্যবসা সে একা সামলে গিয়েছেন। তবে ইডির দাবি, এই চালের ব্যবসা আসলে দুই ভাইয়ের।