Jitendra Tewari: জিতেনের গ্রেফতারি কি আসানসোলে বিজেপির পালে হাওয়া দেবে? চর্চা তুঙ্গে

Jitendra Tewari: নানা রকম এই মতান্তরে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সংখ্যা বেশি থাকলেও, সাংগঠনিক ভিত সুদৃঢ় করতে বেশ বেগই পেতে হয় নেতৃত্বকে, অন্তত তেমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। পুরসভা বা লোকসভা এমনকি বিধানসভাতেও পিছিয়ে পড়ে বিজেপি।

Jitendra Tewari: জিতেনের গ্রেফতারি কি আসানসোলে বিজেপির পালে হাওয়া দেবে? চর্চা তুঙ্গে
জিতেন্দ্রর গ্রেফতারির প্রতিবাদে মিছিল
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 20, 2023 | 4:24 PM

আসানসোল: মেলালেন তিনি মেলালেন। জিতেন্দ্র তিওয়ারি গ্রেফতার হতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে সব বিজেপি নেতৃত্ব এলেন এক সঙ্গে। এক ছাতের তলায় এসে শুরু নামলেন জোরদার আন্দোলনে। সেই দৃশ্যই দেখা গেল আসানসোলে। জেলায় কান পাতলেই শোনা যায়, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত দল। দলের মধ্যেই কার আধিপত্য বেশি, কে আগে থেকে দল করছেন, কে পরে এসেছেন, তা নিয়েই বিবাদ থাকে। কেউ আবার হিন্দি বলয়ের ঘনিষ্ঠ। নানা রকম এই মতান্তরে দলীয় কর্মী সমর্থকদের সংখ্যা বেশি থাকলেও, সাংগঠনিক ভিত সুদৃঢ় করতে বেশ বেগই পেতে হয় নেতৃত্বকে, অন্তত তেমনটাই মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। পুরসভা বা লোকসভা এমনকি বিধানসভাতেও পিছিয়ে পড়ে বিজেপি। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল থেকে অনেকেই বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। তারমধ্যে অন্যতম ছিলেন আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র প্রাক্তন বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি। জিতেন্দ্রর বিজেপিতে যোগদান অনেক আদি বিজেপিই মেনে নিতে পারেননি।

অগ্নিমিত্রা পাল বেফাঁস মন্তব্য করে বলে ফেলেছিলেন, “ওঁকে অনেকেই পছন্দ করেন না।” পরে অবশ্য সুর বদলান অগ্নিমিত্রা। জিতেন্দ্র তেওয়ারি তৃণমূলের থাকাকালীন অনেক বিজেপি নেতৃত্বই হিংসার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ। বর্তমানে বিজেপির মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়। তিনিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তৃণমূল বিরোধী পোস্ট করে জিতেনের রোষের মুখে পড়েছিলেন এবং জেলেও যেতে হয়েছিল। সেই বাপ্পা চট্টোপাধ্যায়কেও দেখা গেল জিতেনের গ্রেফতারের পর প্রথম সারিতে নেতৃত্ব দিতে। জিতেন্দ্রর গ্রেফতারির পর একসময়ে বিরুদ্ধে বলা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়কেও দেখা গিয়েছে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে। বিশাল মিছিল করে থানা ঘেরাও করেছেন তিনি। সেই মিছিলে ছিলেন অগ্নিমিত্রা পালের অনুগামীরাও।

সামনে পঞ্চায়েত ভোট। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, জিতেন্দ্রর গ্রেফতারিতে বাড়তি অক্সিজেন পেল বিজেপি। নওশাদ সিদ্দিকিকে গ্রেফতারের পর যেমন সমস্ত বিরোধীরা একই সুরে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, এক্ষেত্রেও ঠিক তেমনটাই হল বলে মত রাজনৈতিক অভিজ্ঞদের।

যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের কটাক্ষ, “জিতেন এখন গ্রেফতার হয়েছেন। মানুষ চাইছে, জিতেনের যে অর্থনৈতিক প্রতিপত্তি তারও হিসেব হোক। তদন্ত হোক। বিজেপি এখানে কোনদিনই শক্তিশালী ছিলেন না। এখনও নয়। জিতেনে গ্রেফতারিতে কোন প্রভাব পড়বে না।”

অনেকেই বলছেন, জিতেনের গ্রেফতারি ভগ্ন বিজেপিকে জোড়া লাগাল। শিল্পাঞ্চলে পঞ্চায়েতের ভোটের আগে সুবিধা করে দেবে বলেই মত রাজনৈতিক মহলের। বিজেপির মধ্যে যে কোনও ভেদাভেদ রয়েছে, সেটা এখন আর বলছেন না জেলা নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টা আদি বিজেপি নব্য বিজেপি বলে কিছু নেই। বিজেপির কোনও কর্মীর ওপর কোনও আক্রমণ হয়, তখন সবাই এক মঞ্চে থাকবে, এটাই দলের নীতি। এটা যদি সাধারণ কর্মীর ওপরও হত, তাহলেও ঠিক এইভাবেই প্রতিবাদ করতাম। স্বৈরাচারী শাসনের উৎখাত প্রয়োজন।” অন্যদিকে, বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিজেপির মধ্যে কোনও ভাগাভাগি নেই। এটা বিরোধীদেরই রটনা। যে ইস্যুতে প্রতিবাদে বিজেপি কর্মীরা একসঙ্গেই লড়েন। এই মিছিলই তার প্রমাণ।”

আসানসোল ব্লক তৃণমূল সভাপতি, মেয়র পারিষদ গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আইন আইনের পথে চলবে। দোষ প্রমাণিত হলে, তার শাস্তি হবে। একটা লোক যে ভাঙা স্কুটারে আসত, এখন কয়েকশো কোটি টাকার মালিক কীভাবে হল, তার এখনই তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। এখনই সিআইডি তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।”